ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: বয়স মাত্র ৬ বছর। কিন্তু তার চলাফেরা, আচরণ এবং ভাষা দক্ষতা দেখে অনেকেই ভুল করে বসেন—এ যেন কোনো প্রশিক্ষিত বক্তা।
ঠাকুরগাঁওয়ের সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নের তেলিপাড়া এলাকার ছোট্ট শিশু আইমান বিন আশরাফ। এরইমধ্যে সামাজিক ও ভার্চুয়াল মাধ্যমে হয়ে উঠেছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। ইংরেজিতে তার সাবলীল কথা বলার দক্ষতা শুধু এলাকাবাসী নয়, তাক লাগিয়ে দিয়েছে দেশব্যাপী অসংখ্য মানুষকে।
আইমান বর্তমানে ঠাকুরগাঁওয়ের একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ডিভাইন ইন্টারন্যাশনাল স্কুল-এর নার্সারি শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার বাবা আশরাফুল ইসলাম একজন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক। পরিবারের পরিবেশ এবং বাবার সহযোগিতাতেই শিশুকাল থেকেই বই, ভাষা এবং উপস্থাপনায় আগ্রহী হয়ে ওঠে আইমান।
এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, “আইমান শুধু ইংরেজিতেই পারদর্শী নয়, তার আচার-আচরণ, সালাম দেওয়ার ভঙ্গিমা, কথা বলার ভদ্রতা ও স্পষ্টতা আমাদের মুগ্ধ করে। অনেক সময় শিশুরা দুষ্টুমিতে ব্যস্ত থাকে, কিন্তু আইমান ইংরেজি চর্চা নিয়েই ব্যস্ত থাকে। তার মুখে ঠাকুরগাঁও জেলার ইতিহাস শুনে বিস্মিত হই আমরা।”
শিশু আইমান শুধু নিজের পরিচয়ই নয়, ইংরেজিতে সাবলীলভাবে বলতে পারে তার জেলা ঠাকুরগাঁও সম্পর্কে—এর ঐতিহ্য, দর্শনীয় স্থান, উপজেলা ও থানা সম্পর্কেও। তার উপস্থাপনায় রয়েছে চমৎকার ছন্দ এবং স্বচ্ছ উচ্চারণ। নিজ জেলা নিয়ে বাবার সঙ্গে তৈরি করে ভিডিও কনটেন্ট, যেখানে ইংরেজিতে তুলে ধরা হয় ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন ঐতিহাসিক নিদর্শন ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। যা দেখে প্রবাসী বাংলাদেশিরাও মুগ্ধ।
শুধু ইংরেজি নয়, বাংলা, গণিত ও চিত্রাঙ্কনেও রয়েছে তার অসাধারণ প্রতিভা। যেকোনো বিষয়ে কথা বলায় স্পষ্টতা, আত্মবিশ্বাস এবং আধুনিক গঠন কাঠামোর ব্যবহার দেখা যায় তার বক্তব্যে। এই বয়সে এমন উপস্থাপনার দক্ষতা সচরাচর দেখা যায় না।
আইমান যখন ভবিষ্যতের স্বপ্নের কথা বলে, তখনও সে অন্যদের থেকে আলাদা। যেখানে অধিকাংশ শিশু বড় হয়ে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পাইলট বা পুলিশ হতে চায়, সেখানে আইমান জানায়—সে বড় হয়ে হতে চায় একজন ইসলামিক স্কলার। তার কথা, “আমি চাই ইসলাম সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে, বুঝতে এবং মানুষকে সহজভাবে বোঝাতে। ইংরেজি শিখছি, যেন ইসলামের বার্তা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতে পারি।”
শিশু আইমান এখন শুধু তেলিপাড়া বা ঠাকুরগাঁওয়ের গর্ব নয়, হয়ে উঠেছে সারাদেশের অনুপ্রেরণা। এই বয়সেই যেভাবে সে নিজের ভাষাগত ও নৈতিক গুণাবলি প্রকাশ করছে, তাতে ভবিষ্যতে তার মধ্যে একজন মহান চিন্তাবিদ বা সমাজদ্রষ্টার সম্ভাবনা অনেকেই দেখছেন।
এলাকাবাসী, শিক্ষক ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রত্যাশা—সরকারি-বেসরকারি সহায়তা পেলে এই প্রতিভাবান শিশুটির জন্য উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে, আর ঠাকুরগাঁওয়ের নামও সে পৌঁছে দেবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে।
সোহেল/টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/