রাণীশংকৈল(ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:ঠাকুরগাঁওয়ে সরকারের বরাদ্দকৃত গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) প্রকল্পের অর্থে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গ্রামীন অবকাঠামোসহ গ্রামাঞ্চলের মানুষের দূর্ভোগ কমাতে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ার কথা থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জেলা শহরের বিলাসিতায় সৌন্দর্য বর্ধনেব্যয় করা হয়েছে। যা গ্রামীণ উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন সাধারণ মানুষ। তবে জেলা প্রশাসকের দাবি কমিটির সিন্ধান্ত অনুযায়ী এসব প্রকল্পের অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ হওয়া ‘টিআর’ (গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ) প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থের বড় অংশই ব্যয় করা হয়েছে জেলা শহর ও সরকারি দপ্তরের সৌন্দর্য বর্ধনে। অথচ গ্রামে এখনো কাঁচা-রাস্তা, জরাজীর্ণ শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান আর বেহাল অবকাঠামো পড়ে রয়েছে সংস্কারের অভাবে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির আওতায় চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারী ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের অনুকূলে বরাদ্দপ্রাপ্ত ৫৪ লাখ টাকার বিপরীতে জেলা প্রশাসক ২১টি প্রকল্প গ্রহণ করেছেন।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় টিআর প্রকল্পে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের অনুকূলে গৃহীত প্রকল্পের তালিকায় দেখা যায়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে ফোয়ারা, বাগান ও ওয়াকওয়ে নির্মাণে খরচ হয়েছে কয়েক লাখ টাকা। তাছাড়া শিল্পকলা একাডেমি, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আলেকসজ্জা, বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুল, ক্যালেক্টরেট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ সহ শহরের একাধিক দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যদিও সদর উপজেলার বরাদ্দের টাকা খরচ হওয়ার কথা গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়নে। ফলে প্রকৃত প্রকল্পের অর্থ যথাযথ বাস্তবায়ন না হওয়ায় সেবা বঞ্চিত হচ্ছে গ্রামাঞ্চলের মানুষেরা।
অনিয়মের কোন সুযোগ নেই। উন্নয়নের ক্ষেত্রেই সরকারের প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এখানে জেলা প্রশাসক, পৌরসভা, ইউনিয়নের জন্য আলাদা আলাদা প্রকল্প রয়েছে। আর সে হিসেবেই কাজ হচ্ছে।
আর প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়ে জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা জানান, এই বরাদ্দের ম্যাক্সিমামটা আমরা নীতিমালা অনুযায়ী গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়নের জন্যই কাজ করছি। আমার কিছু প্রকল্প ছিল যেখানে স্থানীয় জনসাধারণের আগ্রহ ও দাবির প্রেক্ষিতে সৌন্দর্য বর্ধনের কিছুটা যেমন ছেলে মেয়েদের খেলা মাঠে উন্নয়নমূলক কিছু কাজসহ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নে খরচ হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তবে স্থানীয়রা বলছেন, টিআর প্রকল্প শহুরে খাতে ব্যয় করার ফলে প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে এবং গ্রামের প্রকৃত চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। এসব প্রকল্পও যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না তা উর্ধতনদের খতিয়ে দেখার দাবি তুলেন।
সোহেল/টাঙ্গন টাইমস