গোলাম মোস্তাফিজার রহমান মিলন, হিলি প্রতিনিধি:দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার দামোদরপুর শলা দাখিল মাদ্রাসায় নিয়মবহির্ভূতভাবে গোপনে পরিচালনা কমিটি গঠন এবং জাল সনদে সভাপতি নির্বাচনের অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক মুশফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে। এতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
অভিভাবক সদস্যরা জানান, তারা নিজেরাও জানতেন না যে, তারা ম্যানেজিং কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। কমিটি অনুমোদনের পর প্রথম মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে তারা বিষয়টি জানতে পারেন। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তাঁরা ঘোড়াঘাটের ইউএনও ও মাদ্রাসা বোর্ডে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
জানা গেছে, মাদ্রাসার এডহক কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় নিয়মিত কমিটি গঠনের লক্ষ্যে চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন তফসিল ঘোষণা করেন ঘোড়াঘাট উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার ধীরাজ সরকার। তফসিল অনুযায়ী ২ হাজার ৫শ’ টাকায় সভাপতি, দাতা সদস্য, অভিভাবক সদস্য, শিক্ষক প্রতিনিধি ও সংরক্ষিত নারী শিক্ষক পদের মনোনয়ন আহ্বান করা হয়।
তবে অভিযোগ রয়েছে, নির্বাচনী তফসিল ও তালিকা কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ ছিল। মাদ্রাসা বা এলাকায় কোনো ধরনের নোটিশ বা প্রচারণা চালানো হয়নি। অভিভাবকরা জানতেই পারেননি নির্বাচনের কথা। এমনকি নির্ধারিত দিনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে। পছন্দের ব্যক্তিকে গোপনে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করতে একজন বিএ পরীক্ষায় অংশ না নেওয়া ব্যক্তিকে জাল সনদ ব্যবহার করে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করা হয়।
অভিভাবক সদস্য সাখাওয়াত হাসান বলেন, “আমার জমজ দুই সন্তান ওই মাদ্রাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। প্রায় এক মাস আগে প্রধান শিক্ষক মোবাইল ফোনে মাদ্রাসায় ডেকে নেন এবং জানিয়ে দেন আমি অভিভাবক সদস্য হয়েছি। আমাকে একটি রেজুলেশনে স্বাক্ষর করতেও বলা হয়। অথচ আমি কখনও ফরম তুলি নাই, কিংবা সদস্য হওয়ার আগ্রহও প্রকাশ করিনি। কীভাবে সদস্য হলাম, আমি জানি না।”
অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক মুশফিকুর রহমান বলেন, “নিয়ম মেনেই কমিটি গঠন করা হয়েছে। তখন মাদ্রাসা রমজানের ছুটিতে থাকায় হয়তো অনেকেই জানতে পারেননি।”
জাল সনদে সভাপতি নির্বাচনের অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বর্তমান সভাপতি শাহজাহান সিরাজ বলেন, “কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় আমি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছি।”
ঘোড়াঘাট উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার ও প্রিজাইডিং অফিসার ধীরাজ সরকার জানান, “নির্বাচনী তফসিল নিয়ম মেনেই ঘোষণা করা হয়েছিল। মাদ্রাসা ও এলাকায় প্রচারের দায়িত্ব ছিল প্রধান শিক্ষকের। তিনি প্রচার করেছেন কি না, তা তিনিই ভালো জানেন।”
ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, “বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে অভিভাবক ও এলাকাবাসী একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এখনো তদন্ত শুরু হয়নি, তবে অল্প সময়ের মধ্যেই তদন্ত শুরু করা হবে। কোনো অনিয়ম প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
সোহেল/টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/