• বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫, ১২:১২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

অনলাইন জুয়ার ভয়াল থাবায় নি:স্ব ঠাকুরগাঁওয়ের শত শত পরিবার

Reporter Name / ৫৬ Time View
Update : সোমবার, ৯ জুন, ২০২৫

টাঙ্গন ডেস্ক : অনলাইন জুয়ার ভয়াল থাবায় নি:স্ব হয়ে পড়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের শত শত পরিবার। কেউ কেউ জুয়ার লোভে পড়ে বিক্রী করেছেন জমি-জমা। আর জুয়ারির সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ধ্বংস হচ্ছে যুব সমাজ। সম্প্রতি অনলাইন জুয়ার সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে দুই যুবককে আটকের পর মামলা দিয়ে হাজতে পাঠায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এর সাথে যুক্ত আছেন স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারাও।

চটকদার বিজ্ঞাপনে সয়লাভ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। অল্প পুঁজিতে কয়েকগুন লাভ মহূর্তেই হওয়া যাবে লাখপতি। অনলাইন জুয়ার এসব লোভনিয় ফাঁদে হরহামেসায় পাঁ দিচ্ছে উঠতি বয়সের যুবকসহ সব বয়সের মানুষ। ঠিক এভাবেই দ্রুত টাকা ওয়ালা হওয়ার ফাঁদে পাঁ দিয়ে নি:স্ব হয়েছেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুর গ্রামের তাপসের পরিবার। সহায় সম্পদ হারিয়ে এখন কোন রকমে দিন কাটছে তার পরিবার। তাপসের মতো অনলাইন বেটিংয়ে সব কিছু হারিয়ে নি:স্ব হয়েছেন অনেকে। আবার অনেকে আত্নহত্যার পথও বেছে নিয়েছেন। কেউ কেউ হয়েছেন এলাকা ছাড়া। অন্তবর্তীকালীন সরকার গত ৬ মে অনলাইনে সবধরনের জুয়া নিষিদ্ধ করলেও এর বাস্তবায়ন চোখে পড়ছে না।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, অনলাইন জুয়ার মূল হোতা হিসেবে আছেন সদর উপজেলার শাপলা পিয়ালা গ্রামের বিএনপি নেতা সাইদুর রহমানের ছেলে সারোয়ার রহমান রাতুল (২২), উত্তর বোচাপুকুর গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে তানিম ইসলাম (২২), মাটিগাড়া সেনপাড়া গ্রামের হেমন্ত সেন (৩৩), মাটিগাড়া গ্রামের মৃত সাফিজ উদ্দীন সাফির ছেলে শাহিন আলম (২৮), আব্দুল গফুর (২৫), মন্তাজের ছেলে আলম (২৮)। মুন্সীপাড়া গ্রামের খায়রুল আলমের ছেলে মাসুদ। ছোট বালিয়া জঙ্গলীপাড়া গ্রামের বেলাল হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান, কচুবাড়ি দেবত্তর পাড়া গ্রামের আব্দুল মান্নান অন্যতম।

অসহাত্বের কথা জানালেন তাপসের মা। তিনি বলেন বেটা আগে খারাপ ছিল না। এখন যে এতো খারাপ হয়ে গেছে বলাই যায় না। আর সব হয়েছে অনলাইন জুয়া খেলার কারণে। ভালো পথে তাপসকে আনার অনেক চেষ্টা চালানো হচ্ছে কিন্তু কোন ভাবেই ফেরাতে পারছি না।

অনলাইন জুয়ার কবলে পড়ে নি:স্ব হয়েছে, আত্নহত্যা করেছে, সংসারে অশান্তিতো লেগেই আছে। ঋণগ্রস্থ হয়ে অনেকে এলাকা ছাড়া হয়েছে। যুব সমাজ নষ্ট হচ্ছে। দেশের টাকা বাইরের দেশে যাচ্ছে। কথা গুলো বলেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার শিংপাড়া গ্রামের রোকন ইসলাম। একই গ্রামের নূর ইসলাম বলেন চোখে দেখেও কিছু বলা যায় না। যদি বলা হয় তাহলে উল্টো হুমকি আসে। সালন্দর ইউনিয়নের শামসুল ইসলাম বলেন জুয়া একটা নেশা, কেউ জিতে, কেউ হারে। প্রথমে ৫ হাজার ধরে ১০ হাজার পায়। ১০ হাজার ধরে ২০ হাজার পায়। ২০ হাজার ধরে ৫০ হাজার পায়। এই লোভে যখন দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা ধরে তখন গোটাটাই গোচ্ছা যায়। পরে চালানসহ গাইফ হয়ে যায়।

এই ক্যাসিনোর জন্য যুব সমাজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই ক্যাসিনো দ্রæত বন্ধ হওয়া উচিত। যা দেশের জন্য বিশাল ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। সরকার বড় ধরনের প্রদক্ষেপ নিলে এটা বন্ধ হবে। তা না হলে বন্ধ করা সম্ভব নয় বলে জানালেন হাসান আলী। বিষ্ণু রায় বলেন এই ক্যাসিনোর জন্য আমাদের পরিবারটা ধ্বংস হয়েছে। আর যেন কারো পরিবারে এমন ঘটনা না হয়। সে জন্য প্রশাসনকে প্রদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানান তিনি।

আউলিয়াপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি সাইদুর রহমান বলেন অনলাইন জুয়া শুধু এখানেই নয়, গোটা জেলায় হচ্ছে। এলাকার কতিপয় ছেলে এটা করে। সেটা কেন করে সক্রিয় ভাবে আমরা জানি না। আমারও এলাকায় কমবেশী আছে। আলোচনাটা শুধু একটা জায়গায় সীমাবদ্ধ আছে। শুধু আলিয়াপুরে আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু বিষয়টা তো গোটা বাংলাদেশে হচ্ছে। আর কোথাও শুনি না। শুধু এখানকার কথা শুনি। হয়তো কোন ব্যক্তি নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য এগুলো করছে।

ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম জানান অনলাইন জুয়ার ফলে অনেক পরিবার নি:স্ব হচ্ছে। পারিবারিক কলহ বিবাদ বাড়ছে। আবার যারা এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে তারা ফুলে ফেপে অনেক টাকার মালিক হচ্ছে। এই ক্যাসিনোর সাথে জড়িতদের ধরতে ধরতে পুুলিশ কাজ করছে ।

এ ইসলাম/টাঙ্গন টাইমস


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
HTML Snippets Powered By : XYZScripts.com
https://slotbet.online/
HTML Snippets Powered By : XYZScripts.com