ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:নির্বাচন আসলেই টাঙ্গন নদীর ওপর একটি ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি পান ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের পালপাড়াসহ আশপাশের ১০ গ্রামের মানুষ। কিন্তু ভোট শেষে সেই প্রতিশ্রুতি মিলিয়ে যায়। গত ২৫ বছর ধরে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ প্রতিদিন পার হচ্ছে বাঁশের ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে।
বছরের পর বছর ধরে ঝাকুয়াপাড়া, সেনপাড়া, পালপাড়া, বাগপুর, সিংপাড়া, সর্দারপাড়া, চরঙ্গী, দক্ষিণ ও উত্তর বঠিনা গ্রামের মানুষ বর্ষাকালে নৌকা আর শুষ্ক মৌসুমে সাঁকোই ভরসা। ভারী যানবাহন চলাচল করতে না পারায় দুর্ভোগে পড়তে হয় কৃষক, শিক্ষার্থী, রোগীসহ সর্বসাধারণকে।
কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, “আমরা অনেক সবজি উৎপাদন করি, কিন্তু শহরে ঠিকমতো নিতে পারি না। গাড়ি যেতে পারে না, বাজারদরও পাই না ঠিকভাবে।”
স্থানীয় শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার জানায়, “প্রতিদিন স্কুল যেতে এই সাঁকো পার হতে হয়। ভয় লাগে, অনেকবার মানুষ পানিতে পড়ে গেছে।”
একই গ্রামের বৃদ্ধ কিরণ বালা বলেন, “যুদ্ধের পর থেকেই এই বাঁশের সাঁকো চলছে। অনেক দুর্ঘটনা দেখেছি। এখনো সেই কষ্ট বয়ে বেড়াচ্ছি।”
স্থানীয়দের দাবি, নির্বাচন এলেই জনপ্রতিনিধিরা এলাকা পরিদর্শন করেন, প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। ১৯৯৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সাবেক প্রতিমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেনসহ অনেকেই ব্রিজ নির্মাণের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
আকচা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শিমলা রানী বলেন, “প্রতিটি নির্বাচনে আমরা আশ্বাস পাই। কিন্তু বাস্তবে কিছুই হয় না। আমরা অবিলম্বে ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।”
এ বিষয়ে এলজিইডির ঠাকুরগাঁও অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মামুন বিশ্বাস বলেন, “আমরা সাঁকোটি পরিদর্শন করেছি। জেলার বেশ কয়েকটি ব্রিজের প্রস্তাব একনেকে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই পালপাড়ার ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।”
স্থানীয়দের প্রত্যাশা, বহু বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবিলম্বে ব্রিজ নির্মাণ করা হবে, যা এই অবহেলিত অঞ্চলের যোগাযোগ, কৃষি ও জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সোহেল/টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/