ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:“অন্তবর্তীকালীন সরকার অধ্যাপক ড. ইউনুসের সরকারের নিরপেক্ষতার প্রশ্ন তুলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এবং ঠাকুরগাঁও-১ আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী দেলাওয়ার হোসেন বলেন সরকার আদৌও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে পারবে কি না ? সাধারণ মানুষের মাঝে সন্দেহ তৈরী হয়ে গেছে।
শনিবার (৫ জুলাই) বিকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ভোলারহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ভোট কেন্দ্র কমিটির সদস্যদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন যে সরকারের দায়িত্বে থানা থেকে আসামি ছিনিয়ে নিয়ে যায়, সেই সরকার কীভাবে সুষ্ঠু নির্বাচনের দায়িত্ব নিতে পারে?” এমন প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। যেখানে বেশীর ভাগ রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যমতের যে কমিশন প্রস্তাবনা দিয়েছে, অধিকাংশরাই সম্মতি দিয়েছে । এক-দুটি রাজনৈতিক দলের কারণে ঐক্যমত ভেস্তে যাচ্ছে।
দেলাওয়ার বলেন, লালমনিরহাটের পাটগ্রামে থানা ভাংচুর করে সেখান থেকে আসামী ছিনতাই করে নিয়ে চলে গেল। এখন পর্যন্ত কিছুই করতে পারলো না। এমন পরিস্থিতি নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন কি হবে ? ভোট কেন্দ্রে এসে ভোটের বাক্স তুলে নিয়ে যাবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিছুই করতে পারবে না। সেখানে ভোট কেন্দ্র কিভাবে নিরাপদে থাকবে।
তিনি আরও বলেন জামায়ত নির্বাচনমুখী দল। নির্বাচন থেকে কখনো পিছপা হয় নি। আমরা নির্বাচনী প্রস্তুতি নিচ্ছি, কিন্তু আমরা স্পর্ষ্ট করে বলছি, সংস্কার ছাড়া, লেবেল প্লেইং ফিল্ড ছাড়া নির্বাচন হতে দেওয়া যাবে না। সেই নির্বাচন মানুষ মেনে নিবে না। আওয়ামীলীগ মার্কা নির্বাচন আবার কেন ? না হতে পারে না। দেখতে দেখতে এক বছর চলে গেল। মানুষ নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সরকারি লোকজন এটা দিতে পারছে না, পারবেও না। কারণ এটা জনপ্রতিনিধিদের কাজ।
তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি একটি রাজনৈতিক দল সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজসে সরকারি অনুদান ও সুযোগ-সুবিধা নিজেদের মধ্যে বিতরণ করে নিচ্ছে। সাধারণ মানুষ পাচ্ছে না। চাল চুরি করে নিয়ে চলে যাচ্ছে, চেয়ারম্যান জানে না। “একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ। প্রশাসনের সহায়তায় ওই দল একচেটিয়াভাবে সব সুবিধা ভোগ করছে।
তিনি আরও বলেন, দুর্বল নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে। “স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিয়ে সরকারের সক্ষমতা প্রমাণ করতে হবে। তবেই জাতীয় নির্বাচন তাদের অধীনে অনুষ্ঠিত হতে পারে। নতুবা জনগণ কখনোই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা করতে পারে না।”
দেলাওয়ার হোসেন প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, “আমরা নির্বাচিত হলে ঠাকুরগাঁওয়ে একটি মেডিকেল কলেজ স্থাপন করব ইনশাআল্লাহ। সরকারি হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা ও জনবল নেই, আমরা সেগুলোর আধুনিকায়ন করব।”
তিনি বলেন, “আমার স্বপ্ন, ঠাকুরগাঁওয়ে কোনো বেকার যুবক থাকবে না। তাদের প্রশিক্ষণ, বিনা সুদের পুঁজি ও উদ্যোগ দিয়ে স্বাবলম্বী করা হবে। কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না, এজন্য শিল্প কারখানা স্থাপন করব, যাতে কর্মসংস্থান বাড়ে এবং কৃষকরাও উপকৃত হয়।”
স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও জেলায় মেডিকেল কলেজ, কৃষি কলেজ কিংবা ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় না থাকায় হতাশা প্রকাশ করে তিনি জানান, এসব প্রতিষ্ঠানের জন্য আবেদন করা হয়েছে এবং দ্রুত বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে।
সকল ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “জামায়াতে ইসলামী ইনসাফ ও সাম্যের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করতে চায়। আমরা ক্ষমতায় গেলে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সবাই সমান অধিকার পাবে। আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘুদের জমি দখল ও নির্যাতন করেছে, আমরা তা বন্ধ করব।”
অনুষ্ঠানে জেলা জামায়াতের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কফিল উদ্দিন আহমেদ, রুহিয়া থানা জামায়াতের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
এ ইসলাম/টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/