টাঙ্গন ডেস্ক:বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ইঙ্গিত দিয়েছেন, বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত ধনকুবেরদের সঙ্গে ‘আর্থিক সমঝোতা’য় পৌঁছানো হতে পারে। ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, অপেক্ষাকৃত কম গুরুতর মামলার ক্ষেত্রে এ ধরনের সমঝোতা একটি সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কাছ থেকে অর্থ পুনরুদ্ধারে আন্তর্জাতিক মামলা পরিচালনায় ১০ কোটি ডলার সংগ্রহের লক্ষ্যে কাজ করছেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হন এবং ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এই সরকার বলছে, আগের সরকারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা দেশ থেকে বহু বিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন।
এ সপ্তাহে যুক্তরাজ্য সফরের আগে ঢাকায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে গভর্নর মনসুর বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের অপরাধের প্রকৃতি বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপ নির্ধারিত হবে। তিনি বলেন, ‘যদি আইন লঙ্ঘনের প্রকৃতি তুলনামূলকভাবে হালকা হয়, তবে দেওয়ানি মামলা করব এবং প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আর্থিক সমঝোতার চিন্তা করব।’
তবে কারা এ প্রক্রিয়ার আওতায় আসতে পারেন, সে বিষয়ে তিনি কোনো নির্দিষ্ট উদাহরণ দেননি।
ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী প্রশাসন শেখ হাসিনার পরিবারসহ রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ১১টি পরিবারের বিরুদ্ধে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে। কিছু অভ্যন্তরীণ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে এবং বিদেশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তায় পাচার হওয়া সম্পদ ফেরত আনার চেষ্টা চলছে।
ড. ইউনূস লন্ডন সফরকালে যুক্তরাজ্য সরকারের সহযোগিতা কামনা করে বলেন, ‘এটা চুরি হওয়া অর্থ। আইনগত ও নৈতিকভাবে যুক্তরাজ্যের সহায়তা প্রয়োজন।’
সরকারি নির্দেশনায় তৈরি একটি অর্থনৈতিক শ্বেতপত্রে বলা হয়, শেখ হাসিনার শাসনামলে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে।
আহসান মনসুর ও অন্যান্য কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ দখল, জাল ঋণ এবং সরকারি প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাৎ করে এসব অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে।
এ বিষয়ে গভর্নর জানান, আন্তর্জাতিক মামলা পরিচালনায় অর্থ জোগানদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। তারা বাংলাদেশে এসে মামলার খরচের বিনিময়ে পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা লিটিগেশন ফান্ডিংয়ের দিকেই নজর দিচ্ছি এবং ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। এ উৎস থেকে যতটা সম্ভব অর্থ সংগ্রহ করাই আমাদের লক্ষ্য।’
অস্ট্রেলিয়ার সিডনিভিত্তিক লিটিগেশন ফান্ডার অমনি ব্রিজওয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা এ বছরের প্রথমার্ধে ঢাকা সফর করেছেন এবং আহসান মনসুরসহ ১৬টির বেশি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিয়েছেন।
অমনি ব্রিজওয়ের এনফোর্সমেন্ট বিভাগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক উইগার উইলিঙ্গা বলেন, ‘বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ এবং খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধারে আমরা অর্থায়ন ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সহায়তা করতে আগ্রহী।’
সোহেল/টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/