উপজেলা প্রতিনিধি
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও): হাড় কাঁপানো কনকনে ঠান্ডায় কাবু হয়ে পড়েছে জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার হতদরিদ্র খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশায় শীতের তীব্রতায় ঘরের বাইরে যাচ্ছে না মানুষ। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে সোমবার (১৫ জানুয়ারি) জেলার রাণীশংকৈল উপজেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
কনকনে শীতে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। বিশেষ করে খেটে খাওয়া ও অসহায় মানুষের দুর্ভোগের সীমা চরমে। শীত নিবারণে মানুষকে বিভিন্ন স্থানে আগুন পোহাতে দেখা গেছে। পাশাপাশি বেড়েছে সোয়েটার, জ্যাকেট, শাল-চাদর, মাফলার-কানটুপিসহ গরম জামা-কাপড়ের কদর। ফলে বাজারে গরম পোশাকের চাহিদা বেড়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতে কাবু হয়ে পড়েছেন দুস্থ ও হতদরিদ্র মানুষ। দিনভর পর্যন্ত কুয়াশায় ঢেকে থাকে চারদিক। শীতবস্ত্রের অভাবে অনেকে কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। বেড়েছে বৃদ্ধ ও শিশুদের জ্বর, সর্দি ডায়রিয়াসহ ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগ ।
নেকমরদ এলাকার খোকা মিয়া বলেন, ‘ঠান্ডা গাওত কাটি বইসোছে। ঘরোত একটা কম্বলও নাই। রাইতোত খুব কষ্ট হয়। নদী থাকি হু-হু করি ঠান্ডা বাতাস আইসে। এই ঠান্ডা শুরু হইলে হামার গরিবের কামাই কমে, কষ্ট বাড়ে।’ রাণীশংকৈল পৌরশহরের রিকশাচালক আব্দুল মালেক বলেন, ‘কয়েক দিন থেকে ঠান্ডার কারণে সকাল সকাল দোকানপাট খুলছে না। যেখানে দুপুরের আগে আমি দেড়-দুই শ টাকা ভাড়া পাই, এখন পঞ্চাশ টাকাও হাতে আসছে না।’
এদিকে ঘন কুয়াশার কারণে সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করছে যানবাহন। শীতে কাতর মানুষেরা খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে; বিশেষ করে ছিন্নমূল মানুষগুলো শীতের তীব্রতায় দুর্ভোগে পড়েছে।
রাণীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সামাদ চৌধুরী বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে শীতের তীব্রতা বাড়ায় সর্দি-জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে বেশি আসছেন, যার অধিকাংশ শিশু। তিনি অভিভাবকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন। নতুবা ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখা বাড়তে পারে।
তবে শীতকালীন ফসল সরিষা, গম, আলু, বেগুন, পেঁয়াজ, মরিচ ও বোরো ধানের বীজতলা শীত বা কুয়াশায় থেকে রক্ষা পেতে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ ও লিফলেট দেওয়ার কথা জানান রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম।
https://slotbet.online/