টাঙ্গন ডেস্ক : ঠাকুরগাঁও কারাগারের প্রধান ফটকের সামনে এক বিষণ্ণ ছায়া নেমে এসেছে। সকালের রোদ তখনো তার তেজ ছড়ায়নি, কিন্তু মানুষের দীর্ঘশ্বাসে ভারী হয়ে উঠেছে বাতাস। ইউসুফ আলী, বয়স ৬৮, শীর্ণকায় শরীর, চোখে রাজ্যের হতাশা। তার ছেলে বন্দি, দেখা করতে এসেছেন। কিন্তু কারারক্ষীদের কঠোর মুখ আর মোবাইল নিষিদ্ধের খাঁড়ায় আটকে গেছেন তিনি।
সাজু, এক যুবক, বাবার সাথে দেখা করতে এসেছিলো। কিন্তু মোবাইল ফোনের অজুহাতে তাকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে ফটকের বাইরে। চোখের জল বাঁধ মানছে না তার। রেখা বেগম, প্রায় ৭০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এসেছেন স্বামীর সাথে দেখা করতে। কিন্তু মোবাইল ফোন, এই ছোট্ট যন্ত্রটিই আজ তার পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শহরের অচেনা পথে ফোন রাখার জায়গা খুঁজে না পেয়ে তিনি অসহায়। কারারক্ষী মামুন সরকার, নির্লিপ্ত মুখে জানিয়ে দেন, “আমি স্যারের নির্দেশ পালন করছি।”
কারাগারের চার দেওয়ালের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা এই মানুষগুলোর কষ্ট যেন এক অদৃশ্য দেয়াল গড়ে তুলেছে। সদ্য কারামুক্ত সোহেল সাহা বলেন, “জেলখানার ভোগান্তির বর্ণনা বলে শেষ করা যাবে না। নিম্নমানের খাবার, কারারক্ষীদের দুর্ব্যবহারে সেখানে কাঁদা ছাড়া কোনো উপায় থাকে না।”
কারাগারের জেলার শাহারিয়ার আলম চৌধুরী জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশেই মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়, এই নিষেধাজ্ঞা কি সত্যিই বন্দিদের স্বজনদের কষ্ট লাঘব করতে পারছে? নাকি, শুধু নিয়ম রক্ষার নামে আরও একটি যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে?
এ ইসলাম/টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/