• শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১:৩৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
৩য় দিনেও ঠাকুরগাঁওয়ে কোটা সংস্কারের দাবীতে হাজার হাজার শিক্ষার্থী খুলনায় সাংবাদিকদের কাজে বাধাকারিদের শক্ত হাতে দমন করা হবে-সিটি মেয়র বিদ্যালয়ে কর্মচারি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে অনিয়মের অভিযোগ! কোটা আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে ঠাকুরগাঁওয়ে গায়েবানা জানাজা রাজাকারের পক্ষে নেতৃত্বদানকারিদের বিরূদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন : পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোটা সংস্কার আন্দোলন: পথচারীসহ ৬ জন নিহতের ঘটনায় ব্লাস্টের উদ্বেগ হেলমেট লীগের হিংস্রতা রক্ষী বাহিনীকে ছাড়িয়ে গেছে-মুসলিম লীগ ঠাকুরগাঁওয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সড়ক অবরোধ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঠাকুরগাঁও জেলা আইন শৃংখলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত কোটা আন্দোলনে পলিটেকনিক্যালের শিক্ষার্থীরা

বজ্রপাতে ৭ জেলায় ১০জনের মৃত্যু

টাঙ্গন টাইমস ডেস্ক / ২০৪ Time View
Update : সোমবার, ৬ মে, ২০২৪

দেশের সাত জেলায় বজ্রপাতে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৬ মে) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাতে শরীয়তপুরের দুই উপজেলায় তিনজন, সিলেটের কানাইঘাটে একজন, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে একজন, নেত্রকোনার আটপাড়ায় একজন, ফরিদপুরের মধুখালীতে একজন, হবিগঞ্জের বাহুবলে একজন ও মাদারীপুরে দুজনের মৃত্যু হয়।

শরীয়তপুর : শরীয়তপুরের জাজিরা ও ভেদরগঞ্জ উপজেলায় বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দুপুরে দুই উপজেলায় বৃষ্টির সময় হঠাৎ বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু হয়।

মৃতরা হলেন, জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের পাইনপাড়া এলাকার আলতু মাঝির মেয়ে আমেনা বেগম ও একই উপজেলার কুন্ডেরচর ইউনিয়নে আশ্রয়ণ প্রকল্পের এক নির্মাণ শ্রমিক। তাৎক্ষণিকভাবে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ছাড়া ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার চরসেনসাস ইউনিয়নের বেড়াচাক্কি গ্রামের নেছার উদ্দিন মাঝির স্ত্রী কুলসুম বেগম মারা গেছেন। বজ্রপাতে সাত জেলায় দশজনের মৃত্যু

স্থানীয় জানান, বৃষ্টির মধ্যে মায়ের খোঁজ করতে গিয়েছিলেন আমেনা বেগম। ফসলি মাঠের মধ্য দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে মাকে খুঁজছিলেন তিনি। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাতের আঘাতে মারা যান আমেনা বেগম। স্থানীয় জাহাঙ্গীরের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল আমেনা বেগমের। তার দুই বছরের একটি ছেলেসন্তান রয়েছে।

পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা পুলিশের ওসি শেখ শরীফুল আলম বলেন, বজ্রপাতে এক নারীর মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তারা এসে প্রতিবেদন দিলে বিস্তারিত বলা যাবে।

অন্যদিকে জাজিরা উপজেলার কুন্ডেরচর ইউনিয়নে আশ্রয়ণ প্রকল্পের এলাকায় বৃষ্টি ও বজ্রপাতের সময় কাজ করতে ছিলেন এক নির্মাণ শ্রমিক। এ সময় বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়। তার বাড়ি নীলফামারী জেলায়। তবে পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। জাজিরা ইউএনও সাদিয়া ইসলাম লিমা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ ছাড়া জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার চরসেনসাস ইউনিয়নের বেড়াচাক্কি গ্রামে সয়াবিন ক্ষেতে কাজ করছিলেন নেছার উদ্দিন মাঝি। দুপুরে তার স্ত্রী কুলসুম বেগম স্বামীর জন্য দুপুরের খাবার ভাত নিয়ে গিয়েছিলেন সয়াবিন ক্ষেতে। এ সময় ঝড়সহ বজ্রপাত শুরু হলে বজ্রপাতে কুলসুম বেগম মারা যান।

চরসেনসাস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিএম আনোয়ার হোসেন বলেন, দুপুরে বজ্রপাতে কুলসুম বেগম নামে এক কৃষাণীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে সারা দেশে ঝড়বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত শুরু হয়। সকলের সতর্ক থাকা উচিত।

সিলেট : সিলেটের কানাইঘাটে মাঠে গরু চরাতে গিয়ে বজ্রপাতে মাহতাব উদ্দিন মাতাই (৪৫) নামে এক ওমান প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকালে উপজেলার দীঘিরপার ৩নং পূর্ব ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

মাহতাব উদ্দিন মাতাই উপজেলার দর্পনগর পশ্চিম করচটি গ্রামের রফিকুল হকের ছেলে। তিনি ওমান প্রবাসী ছিলেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কানাইঘাট থানার ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার। তিনি বলেন, সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাহতাব উদ্দিন সুরমা নদী তীরবর্তী মাঠে গরু চরাতে যান। এ সময় বজ্রপাত হলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে বজ্রপাতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় নিজ বাড়ির পাশে মাছ ধরতে গেলে বজ্রপাতে মারা যায়।

স্থানীয়রা জানান, সকাল থেকেও বৃষ্টির সাথে সাথে বজ্রপাত শুরু হয় এ সময়ে ছনোয়ার মিয়ার ছেলে সমুজ মিয়া (৩০) জমির সাথে ছড়ায় মাছ ধরতে গেলে আকস্মিক বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই সমুজ মিয়া মারা যান। সে সদ্য বিবাহিত। তাঁর অকাল মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে।

পতনঊষার ইউপি চেয়ারম্যান অলি আহমদ খাঁন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সদ্য বিবাহিত সমুজ মিয়ার মৃত্যুতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইউএনও সাহেব সহায়তার কথা জানিয়েছেন।

নেত্রকোনা : নেত্রকোনার আটপাড়ায় বোরো জমিতে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে মো. দিলওয়ার মিয়া (৩৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার স্বরমুশিয়া হাওরে এ ঘটনা ঘটে। দিলওয়ার মিয়া উপজেলার স্বরমুশিয়া গ্রামের ফিরোজ মিয়ার ছেলে।

আটপাড়া থানার ওসি মোহাম্মদ তাওহিদুর রহমান বলেন, সোমবার সকালে বাড়ি থেকে দিলওয়ার নিজের জমির ধান কাটতে হাওরে যান। এ সময় বজ্রপাতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আটপাড়া ইউএনও এম সাজ্জাদুল হাসান বলেন, নিহত কৃষকের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হবে।

ফরিদপুর : ফরিদপুরের মধুখালীতে বজ্রপাতে মুরাদ মল্লিক (৫০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরেক কৃষক। সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার কামালদিয়া ইউনিয়নের মীরেপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

মুরাদ মল্লিক কামালদিয়া ইউনিয়নের মীরেপাড়া গ্রামের লকাই মল্লিকের ছেলে। আহত কৃষকের নাম মো. কামরুজ্জামান (৪৫)। তিনি কামালদিয়া ইউনিয়নের মীরের কাপাষহাটিয়া গ্রামের বাসিন্দা।

কামালদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওয়ালিদ হাসান বলেন, দুই কৃষক মীরেপাড়া গ্রামের একটি ক্ষেতে কাজ করছিলেন। এ সময় বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মুরাদ মল্লিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক কবির সরদার বলেন, মুরাদ মল্লিককে মৃত অবস্থায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। আহত কামরুজ্জামানকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জের বাহুবলে সোমবার সকালে বজ্রপাতে দানিছ মিয়া (৫৫) নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত দানিছ মিয়া সাতপাড়িয়া গ্রামের রহিম উল্লাহর ছেলে।

জানা যায়, হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার সাতপাড়িয়া গ্রামে বাড়ির পাশের জমি থেকে গরু আনতে গিয়ে বজ্রাঘাতে দানিছ মিয়া নামে (৫৫) মৃত্যু হয়। দানিছ উপজেলার চলিতাতলা মাদ্রাসার শিক্ষক।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বাহুবল থানার ওসি মো. মশিউর রহমান জানান, সোমবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এর আগে রোববার সন্ধ্যায় হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে বজ্রপাতে হালেমা খাতুন (৪৪) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়।

মাদারীপুর : মাদারীপুরে পৃথকস্থানে বজ্রপাতে এক শ্রমিক ও একজন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৬ মে) দুপুরে কুমার নদীতে গোসল করতে নেমে সঞ্জিত বল্লভ (৩৫) ও বিকেলে বাড়ির আঙ্গিনায় থাকা গরু গোয়ালে রাখতে যাওয়ার সময় জসিম হাওলাদার (৪২) বজ্রপাতে নিহত হয়েছে।

সনজিত বল্লভ গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়া কলাবাড়ি ইউনিয়নের শিমুলবাড়ি এলাকার নগেন বল্লভের ছেলে। তিনি মাদারীপুর পুরানবাজার আজমিরি মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। অপরজন নিহত জসিম হাওলাদার কালকিনি উপজেলা কয়ারিয়া ইউনিয়নের মোল্লার হাট রামারপোল গ্রামের হান্নান হাওলাদারের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর পুরাতন বিসিক শিল্পনগর এলাকায় কুমার নদীতে গোসল করছিলেন সঞ্জিত বল্লভ। হঠাৎ নদীতে বজ্রপাতের সময় পানিতে গোসলরত অবস্থায় অচেতন হয়ে যান তিনি। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় তাকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।

এব্যাপারে মাদারীপুর সদর থানার ওসি এইচ এম সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা খবর পেয়েছি বজ্রপাতের ঘটনায় পৃথক স্থানে দু’জন নিহত হয়েছে।

আরএম/ টাঙ্গন টাইমস


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/