• শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১:০৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
৩য় দিনেও ঠাকুরগাঁওয়ে কোটা সংস্কারের দাবীতে হাজার হাজার শিক্ষার্থী খুলনায় সাংবাদিকদের কাজে বাধাকারিদের শক্ত হাতে দমন করা হবে-সিটি মেয়র বিদ্যালয়ে কর্মচারি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে অনিয়মের অভিযোগ! কোটা আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে ঠাকুরগাঁওয়ে গায়েবানা জানাজা রাজাকারের পক্ষে নেতৃত্বদানকারিদের বিরূদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন : পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোটা সংস্কার আন্দোলন: পথচারীসহ ৬ জন নিহতের ঘটনায় ব্লাস্টের উদ্বেগ হেলমেট লীগের হিংস্রতা রক্ষী বাহিনীকে ছাড়িয়ে গেছে-মুসলিম লীগ ঠাকুরগাঁওয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সড়ক অবরোধ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঠাকুরগাঁও জেলা আইন শৃংখলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত কোটা আন্দোলনে পলিটেকনিক্যালের শিক্ষার্থীরা

এমপিকে হুমকি, দেশে কি নজির আছে ?

Reporter Name / ১৯৩ Time View
Update : শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪

আবু মহী উদ্দীন: ভোটের মৌসুমে জানা যায় সমাজে কত গুনীজন আছে। আমাদের দ্বায়িত্ব শুধু বেছে নেওয়া। যেমন গরীবের বন্ধু , উন্নয়নের রুপকার , মেহনতী মানুষের নয়নমনি , সৎ , যোগ্য , অভিজ্ঞ , তারুণ্যের অহংকার , নির্লোভ , পরোপকারী , জনদরদী , শ্রমজীবি মানুষের কণ্ঠস্বর , সকলের সুপরিচিত , একাধিকবারের সফল —তারা চাঁদাবাজ মুক্ত এবং মাদকমুক্ত ঠাকুরগাঁও গড়তে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে সেবা দেওয়ার সুযোগ চেয়েছেন। যাদের দুই নয়নে শুধু ঠাকুরগাঁওয়ের উন্নয়ন স্বপ্ন। চাঁদাবাজি এবং মাদক বর্তমানে বার্ণিং ইসু। এ ২টি বিষয় নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ প্রশাসন কাজ করছেন এবং ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার নিয়মিত সাংবাদিক সম্মেলন করছেন। বিজিবি , মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সবাই কাজ করছেন কিন্তু নির্মূল করা যাচ্ছে না। তার মানে প্রমান হচ্ছে যে এসব সমস্যা আছে। যে সব প্রতিনিািধরা ভোটে দাঁড়িয়ে এসব নিয়ন্ত্রনের কথা বলছেন তারাও জানেন বিষয়গুলো আছে। তবে এটা ঠিক যে এ পর্যন্ত এসব নিয়ন্ত্রনে তারা কোন ভুমিকা রেখেছেন এমন কোন নজির নেই। এসব নিয়ন্ত্রণে তাদের কি ভুমিকা রাখার সুযোগ ছিল না ?

নির্বাচনের আগে সরকারী দল বললো , এমপি মন্ত্রীর আত্মীয় স্বজনরা ভোটে দাঁড়াতে পারবেনা। একমাত্র জুনাইদ পলক ছাড়া আর কারো আত্মীয় স্বজন ভোটে দাঁড়িয়েছে এমন প্রমান পাওয়া যায়নি। কারণ সবাই আত্মীয়তার সুত্র স্বীকার করেননি, মন্ত্রী এমপিরাও বলেছেন তারা আমাদের নিয়ন্ত্রনের বাইরে। তারা প্রার্থী হয়েছেন , ভোট করেছেন , জিতেছেন , আরো ভোট করবেন , এবং জিতবেন দলেরও কিছু করার থাকবে বলে মনে করার কোন কারণ নাই। ঘরের ছেলেরা দলের প্রয়োজনে ঘরে ফিরবে।

মন্ত্রী এমপিরা কোন প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন করতে পারবেননা এমন কি দলের কোন নেতা বা কর্মী কোন প্রার্থীর পক্ষে প্রচরাভিযানে নামতে পারবেননা। এমপি মন্ত্রীদের কি বাড়ী বাড়ী গিয়ে ভোট করতে হবে? এমপি মন্ত্রীর কেন পছন্দের প্রার্থী থাকবেনা সেটা অবশ্য আমরা বুঝিনা । এটাকি বন্ধ করা গেছে। তিনি কি নির্দেশনা মাইকিং করে জানাবেন? এই কাজ করলে মন্ত্রী এমপিদের কি শাস্তি দেওয়া হবে তা অবশ্য দল বলেনি। সুতরাং এই অপরাধে কেউ অপরাধী হবেননা। অপরাধী না হলে আবার শাস্তি কি? এসব মৌখিক হুঙ্কারে কোন কাজ হয়েছে বা হবে এমন মনে করার কোন কারণ নাই।

নির্বাচন কমিশনার নির্বাচন উপলক্ষ্যে প্লেজার ট্রিপে দেশ ভ্রমন করছেন এবং একাধিক সমাবেশে বলছেন . কোন এমপি বা মন্ত্রী যদি কোন প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন তাহলে সেই প্রার্থীর প্রার্থীতা বাতিল হবে। কোন মন্ত্রী এমপি যদি কারো পক্ষে কাজ করেন তাহলে মন্ত্রী এমপির দোষ হবেনা , হবে প্রার্থীর। এই বক্তব্যের কোন আইনগত ভিত্তি নাই। নির্বাচন কমিশনের এসব দেখার দ্বায়িত্ব কেউ তাদের দেয়নি। তাদের কাজ হলো নির্বাচনে আইন প্রতিপালিত হচ্ছে কিনা , ব্যত্যয় হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া। নিজেদের অধিক্ষেত্র ছাড়ানোর প্রয়োজন কি ?

বিএনপি এখন বহিস্কারের যুগ অতিক্রম করছেন। চুন থেকে পান খসলেই বহিস্কার। এই বহিস্কার পদ্ধতি চালু থাকলে ‘ঠাগ বাছতে গাঁ উজার’ হবে। যদি কোন দিন রাজনীতি করতেই হয় তাহলেতো নেতাই পাওয়া যাবেনা। তবে ঘরের ছেলেরা আবার ঘরে ফিরে আসবে, সে বিশ^াস আমাদের আছে। এই কাজটা দলীয় প্রয়োজনেই করতে হবে। ওটা হবে সময়ের দাবী। এখন বলছেন কোন নির্বাচনেই অংশ নিবেননা , আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের তো বাধ্যবাধকতা আছে। তখনও এই সিদ্ধান্ত থাকলে আম ছালা দুটোই যাবে। আমরাতো ভোটের সেন্টারে যেতে চাই , বিএনপি আমাদের বঞ্চিত করলো।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাচন আগামী ২১ মে। মাইকিং এর মাধ্যমে প্রার্থীদের নাম শুনতে পাচ্ছি। এলাকাটা অনেক বড়। সব প্রার্থীরা আমাদের চিনবে বা আমার কাছে ভোট প্রার্থনা করবে এমন আশা করা ঠিকনা। সব প্রার্থীদের চিনিও না দেখিওনি। দেখা জরুরী নয়। কেননা মাইকিং এর বদৌলতে প্রার্থীদের স্বভাব চরিত্র , যোগ্যতা , দক্ষতা , অভিজ্ঞতা এবং কর্মক্ষমতার খবর জানতে পারছি।

অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে আমেরিকা ইউরোপের মতো নির্বাচন ব্যবস্থায় আমরা পৌছে গেছি । সেসব দেশে আমাদের মতো মাইকিং পদ্ধতি চালু নাই। তাদের মেনিফেষ্টোই হলো মুল উপজীব্য। নির্বাচিত হলে কে কি করবেন , মেনিফেষ্টোতে কি বলা আছে সেই বিবেচনায় তার ভোট। বাঁকী কাজ মিডিয়াই করে। প্রার্থীকে দেখা বা চেনার কোন প্রয়োজন নাই।

পৃথিবীর সব দেশেই নির্বাচনের সময় মানুষকে ভোটে অংশ নেওয়ার জন্য আহবান জানানো হয়। আমাদের দেশে মিটিং করে মানুষকে ভোটে আসতে নিষেধ করা হচ্ছে। এই কাজটা ভালো হচ্ছেনা। এটা আবার সেই রাখাল বালকের মতোও হতে পারে। প্রকৃতই যখন ভোটারদের প্রয়োজন হবে তখন হয়তো আবার আনা যাবেনা। এখনতো মনে হচ্ছে রাহা খরচ না দিলে ভোটের সেন্টারে যাবো কিনা বিবেচনা করতে পারি। কেননা মুলত: ভোটের বিনিয়োগ তুলে নেওয়ার জন্য ৫ বছরের জন্য মালিকানা হস্তান্তর করা। সাংবিধানিক সুবিধা আছে, কত পার্সেন্ট ভোট পেতে হবে এর কোন সীমা পরিসীমা নেই। একজন প্রার্থী ৫/১০ টা ভোট পেলেও নির্বাচিত হতে বাধা নেই। অংশগ্রহণ ছাড়া ভোটে নির্বাচিতরা স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠার সুবিধা বেশী হয়। প্রকারান্তরে বিরোধী দলগুলো যারা মানুষকে নির্বাচন বিমুখ করছে তারা এর জন্য কম দ্বায়ী হবেনা।

ঠাকুরগাঁয়ের নির্বাচন নিয়ে একটি মৌলিক প্রশ্ন সামনে এসেছে। এমপি মন্ত্রীরা কোন প্রার্থীর পক্ষে কাজ করলে শাস্তি হবে, আত্মীয় স্বজনরা ভোট করলে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। এমপি মন্ত্রী যার পক্ষে কাজ করবে তার প্রার্থীতা বাতিল হবে। ভোটারদের ভয় ভীতি দেখালে আচরনবিধি লংঘিত হবে এবং শান্তির বিধান আছে। কিন্তু কোন প্রার্থীর পক্ষ থেকে এমপি মন্ত্রীকে যদি হুমকি দেওয়া হয় তাহলে কি হবে? এরকম ঘটনা ঘটতে পারে নির্বাচন কমিশন হয়তো চিন্তার মধ্যেই আনতেই পারেনি। কেননা মন্ত্রী এমপি হুমকি দিবে এটাই প্রচলিত ধারণা , সেখানে উল্টা ঘটনা , সম্ভববত এটা নজীরবিহীন। বিষয়টা সকল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।

আবার বিষয়টা যদি এরকম হয়, যেহেতু এমপি সাহেব জানেন যার পক্ষে কাজ করবেন তার প্রার্থীতা বাতিল হবে, সেই বিবেচনায় সুকৌশলে যদি এই কাজ করা হয়, তাহলে কথিত প্রার্থীর প্রার্থীতা বাতিল হলে তার প্রকৃত মনোনীত প্রার্থীর বিজয় ঠেকায় কে? হুমকিতে বলা হয়েছে তাকে রুহিয়া থেকে আনা হয়েছে আবার রুহিয়াতে ফেরত পাঠানো হবে। তিনি কোন নির্বাচন করেননি , তিনি বিনা ভোটের এমপি। তবে আমাদের খারাপ লাগারও বিষয় থাকা উচিত তা হলো , যারা বলেছেন তারা আওয়ামী লীগের নের্তৃস্থানীয়। তারা এই সব অভিযোগ দলীয় ফোরামে বলতে পারেন। প্রকাশ্যে বললে আপনারা যে চেইন অব কমান্ড মানেননা সেটাই প্রমান হবে। চেইন অব কমান্ড না মানলে সেই দল করার কোন অধিকার থাকে বলে আমরা মনে করিনা।

তবে এসব কিছু ছাড়িয়ে যে বিষয়টি উদ্বেগের তা হলো অভিযোগ করা হয়েছে একজন মন্দির ভিত্তিক একজন মসজিদ ভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা করছেন। এই অভিযোগ আওয়ামী লীগ আমলে উঠা অনভিপ্রেত। নির্বাচনী কৌশলে এই প্রশ্ন সামনে আসলে সাম্প্রদায়িক সম্পীতির উপজেলা প্রমান করা কঠিন হয়ে পড়বে। দলের উচিত বিষয়টি খতিয়ে দেখা। সমস্যা হলো পুলিশ সুপার বলেছেন অভিযোগ করলে খতিয়ে দেখা হবে। নির্বাচন কর্মকর্তাও ঐ কথাই বলবেন। ভাবখানা এই যে ,তারা দোকান খুলে বসে আছে , ক্রেতারা এসে লিখিত আবেদন করলেই তারা সক্রিয় হবেন, তাহলে নির্বাচনী আচরনবিধি কার্যকর কিভাবে কে করবে? এমপি সাহেব এসে লিখিত আবেদন করবেন তার পর একশন হবে?

নির্বাচনে প্রকাশ্যে কোন প্রার্থীকে সমর্থন দিতে দলীয়ভাবে নিষেধ করা আছে। রমেশ চন্দ্র সেন দলীয় শৃঙ্খলাঅন্ত:প্রান। তিনি দলীয় নির্দেশনা মানবেননা , এমনটা কল্পনাও করা যায়না। এমপি রমেশ চন্দ্র সেন এ বিষয়ে বেশ সচেতন। আবার বিপরীত ক্রমে যারা প্রকাশ্যে যারা অভিযোগগুলো করেছেন , ব্যক্তিগত আক্রোশের বশে এমন কতগুলো কথা বলেছেন যা নির্বাচনী আচরন তো বটেই , নিজ দলের বিপক্ষেও যাবে, সে বোধ শক্তিটাওতো থাকা দরকার। এটাতো নিজের নাক কেটে অন্যের যাত্রা ভঙ্গ করা।
তবে আমরা ভোটাররা মনে করি , আপনারা কিভাবে ভোট করেন সেটা আমরা জানি। তবে ঘরের কথা পরকে বলা আপনাদের উচিত হচ্ছে না।

যেহেতু নিজেরা নিজেরা ভোট করছেন , ভালো করতেন ৪ জন মিলে সিন্ডিকেট করে একজনকে মনোনীত করে বিনা ভোটে জেতাতে পারতেন। এতে লাভ ছিল বহুবিধ। কত খরচ বাঁচতো। অনেকে অভিযোগ করেছেন , কেউ হয়তোবা কাউকে জেতানোর জন্য তার পক্ষ হয়ে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন, সে অভিযোগ থেকেও রক্ষা পেতেন। পরবর্তীকালে সুযোগ সুবিধা বন্টনে সুবিধা হতো। তবে বিষয়টা যদি এরকম হয় , যে এবারে পরিচিতি পরের বার ভোট , তাহলে ঠিক আছে।

একটা চুটকি বলা যেতে পারে। গ্রামের মাঠে কাজী সাহেবের গরু আর একজন কলুর গরু চড়তো। কাজী সাহেবের সরকারি গরু , দেখাশেনার লোকেরা ঠিকমতো যত্ন নিতো না, ফলে কাজীর গরু অপেক্ষাকৃত দুর্বল। অপরদিকে কলু তার গরুটার যত্ন নেয় , পরিচর্যা করে , কেননা ঐ গরুটাই তার আয় রোজগারের উপায়। এই গরুটা মোটাতাজা এবং শক্তিশালী। মাঠে চড়ানোর সময় প্রতিদিন কাজীর গরুটা কলুর গরুর কাছে মার খায় , আর কাজীর দরবারে বিচার আসে। বিচারে সব সময় কাজীর গরু দোষী সাব্যস্ত হয় এবং শাস্তি হয়।

একদিন বেকায়দায় কলুর গরুটা মারাত্মক জখম হলো। কাজীর দরবারে বিচার আসলো। কলু ভাবলো দেখি আজকে কাজী সাহেব কি বিচার করেন? আজকের অপরাধী কাজীর গরু। বিচারকরা ভাবলো , এ বিচারতো সাধারণ আইনে হতে পারেনা। সুতরাং আইনের বই পুস্তক ঘাঁটাঘাটি শুরু হলো। কোন দেশে কি আইন আছে তা সংগ্রহ করা শুরু হলো। আইনের কিতাব সংগ্রহ করা হলো। অবশেষে এবিষয়ে কিতাবে কি লেখা আছে জুরীরা তা দরবারকে জানালো। কিতাবে লেখা আছে “ কাজীকা গরু সাথ , কলুকা গরু , নাই পারতা হ্যায় তো লাগতা হ্যায় কেন?” এই অপরাধে আবার কলুর গরুরই শাস্তি হলো।

এ ইসলাম/টাঙ্গন টাইমস


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/