• শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১:৩২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
৩য় দিনেও ঠাকুরগাঁওয়ে কোটা সংস্কারের দাবীতে হাজার হাজার শিক্ষার্থী খুলনায় সাংবাদিকদের কাজে বাধাকারিদের শক্ত হাতে দমন করা হবে-সিটি মেয়র বিদ্যালয়ে কর্মচারি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে অনিয়মের অভিযোগ! কোটা আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে ঠাকুরগাঁওয়ে গায়েবানা জানাজা রাজাকারের পক্ষে নেতৃত্বদানকারিদের বিরূদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন : পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোটা সংস্কার আন্দোলন: পথচারীসহ ৬ জন নিহতের ঘটনায় ব্লাস্টের উদ্বেগ হেলমেট লীগের হিংস্রতা রক্ষী বাহিনীকে ছাড়িয়ে গেছে-মুসলিম লীগ ঠাকুরগাঁওয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সড়ক অবরোধ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঠাকুরগাঁও জেলা আইন শৃংখলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত কোটা আন্দোলনে পলিটেকনিক্যালের শিক্ষার্থীরা

শাস্তি বা বহি:স্কার কোনটিই বাস্তবায়নযোগ্য নয় !

Reporter Name / ২০৪ Time View
Update : মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪

আবু মহী উদ্দীন

রাজবাড়ীতে ইসি যে ঘোষণা দিয়েছেন তা বাস্তবায়ন কি সম্ভব হবে? কোন এমপি মন্ত্রী যদি কোন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন , তাহলে সেই প্রার্থীর প্রার্থীতা বাতিল হবে। এতোবড়ো বাস্তবায়ন অযোগ্য বক্তব্য দেওয়ার পদ নির্বাচন কমিশনার নয়। প্রশ্ন হলো তৃণমুল পর্যায়ে উপজেলা নির্বাচন রাজনৈতিক দলগুলোর দেউলিয়াত্বের বহি:প্রকাশের শ্রেষ্ঠ প্রমান। একই সঙ্গে নিয়ন্ত্রণহীনতার উৎকট বহি:প্রকাশের নমুনা।

ধরুন হঠাৎ করে পৃথিবীর এই অংশটা ধ্বংশস্তুপে পরিণত হলো। এরপর হাজার বছর পর আবার এখানে জনপদ গড়ে উঠলো , আস্তে আস্তে পুরাকীর্তি খোড়া শুরু হলো , এরপর আবিস্কার হবে এই অঞ্চলে ‘বহিস্কার এবং শাস্তির’ জনপদ ছিল। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের কর্মীদের একদল বহি:স্কার করতো আর এক দল শাস্তি দিত , কিন্তু কোনটাই কার্যকর হতো না।

বর্তমান সময়ে দেশের রাজনীতিতে নিয়ামক শক্তি ২টি আওয়ামী লীগ আর বিএনপি। দুই মেরুর দুই দল। মুখ দেখাদেখি নাই। বিএনপির স্থানীয় অনেক নেতা কর্মীরা আছেন যারা নিজ এলাকায় যথেষ্ট জনপ্রিয়। এদের অনেকেই নির্বাচনে জয়লাভ করবেন। হলে কি হবে বিএনপি নির্বাচন প্রশ্নে সব কিছুতেই না। উপজেলা হলো স্থানীয় সরকারের অংশ। এখানে যারা প্রার্থী হবেন তারা তো পার্লামেন্ট নির্বাচনে সুযোগ করে নিতে পারবেন না। আর কেবলমাত্র সংসদ সদস্যরাইতো দল চালাবেন না। এর জন্য বিভিন্ন লেভেলের কর্মী দরকার।

স্থানীয় সরকারের উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির যারা নির্বাচন করছে , তাদেরকে বহি:স্কার করছে। অবস্থাটা এমন যে কম্বলটাই রাখা যায় কিনা ? কিন্তু বিএনপির এই নেতারা কেন্দ্রের এই বহিস্কারাদেশ নিয়ে চিন্তিত নয়। তারা নির্বাচন করবেনই । অনেকে নির্বাচিত হবেন। এরপর হয়তো আবার তাদের বহি:স্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হবে। এখন বহিস্কারাদেশ চলছে , বিএনপির আবাসিক প্রতিনিধির মাধ্যমে এবং পর মহাসচিব বলবেন আমিতো জানতাম না , এখন বহি:স্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হবে। যেমন অতীতেও হয়েছে , এটা বিএনপির চলমান প্রক্রিয়া। যেমন ব্যারিষ্টার মাহবুব উদ্দীন খোকনকে বহি:ষ্কার করা হলো আবার প্রত্যাহার করা হলো। সমস্যা হলো আগামী জাতীয় নির্বাচনে কি হবে? তখনোকি বিএনপি গোঁ ধরবে? আইনী জটিলতা আছে। আগামী নির্বাচনে অংশ না নিলে আম ছালা দুটোই যাবে।

যেহেতেু দেশ এখন ২ দলের , সেকারনে বিএনপি ভুল করলে আওয়ামী লীগও ভুল করবে এটা আমরা বিশ^াস করতে চাইনা। কিন্তু হলে কি হবে, উপজেলা নির্বাচনে মার্কা নাই। অর্থাৎ যে কেউ নির্বাচন করতে পারবে। উন্মুক্ত করার পর নুতন সমস্যা দেখা দিয়েছে , তা হলো নিজেদের মধ্যেই ভোট হবে। এতে স্থানীয় পর্যায়ে দলীয় শৃঙ্খলা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এই ক্ষতি পোষানো যাবে কিভাবে সেটাও ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচন উন্মুক্ত হওয়ায় যে যার মতো দাঁড়িয়ে গেছেন।

মন্ত্রী এমপি সাহেবরা সঙ্গত কারণেই তাদের পছন্দের লোককে নির্বাচন করার চেষ্টা করবেন এটাই স্বাভাবিক। এটা ঠেকানোর জন্য দলীয়ভাবে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও বাস্তবে তা সম্ভব হবে না। দল সিদ্ধান্ত দিয়েছে মন্ত্রী এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। তার মানে দাঁড়ায় মন্ত্রী এমপির স্বজনরা রাজনীতিই করতে পারবেন না। কোন পরিবারে একাধিক নেতা কেন থাকবে না?। যোগ্য নেতা থাকলে নির্বাচন কেন করবে না? দলের এই সিদ্ধান্ত এড়ানোর জন্য যে পরিমান মেধা থাকা দরকার , মন্ত্রী, এম পি এবং তাদের স্বজনদের তা নাই সেটা ভাবা অবান্তর। কেননা মন্ত্রী এমপি সাহেবরা বলবেন আমি তো তাদের নিয়ন্ত্রন করি না , তারাতো দীর্ঘদিন থেকে আলাদা।

আবার প্রার্থীরা বলবেন মন্ত্রী এমপির সাথে কোন সম্পর্কই নাই। এমনতো হতো পারে তাদের প্রাথমিক সদস্য পদই নাই। তাহলে কি হবে? বহি:স্কার করার সুযোগ নাই। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া একজন রাজনীতিকের মৌলিক অধিকার। এটা রাজনীতিক কেন সকল নাগরিকেরই সেই অধিকার আছে। অবশেষে স্বজনের তালিকা প্রকাশ করেছে শাসকদল। স্ত্রী আর পুত্র। কিন্তু তারা কি বিবেচনা করেছেন যারা নির্বাচনে প্রার্থী হন তাদের বৌ’রা কতটা বিত্তশালী। নির্বাচনী হলফ নামার যে দু’চারটা খোজ খবর যা পাওয়া যায় তাতেই তো দেখা যাচ্ছে ক্ষেত্র বিশেষে বৌ’রাই বেশী বিত্তশালী। মানে তাদের ব্যবস্যা বানিজ্য , আয় ইনকাম আছে। তাদের স্বাধীনতা অস্বীকার করার সুযোগ নাই।
শুধু দলগুলোই ভুল করছে তাইই নয় , ইসিও ভুল করছে। নির্বাচনে কে প্রার্থী হবে , কারা কার পক্ষে কাজ করবে সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের মাথাব্যথা থাকা ঠিক নয়। ইসি দেখবে নির্বাচনী বিধি ঠিক আছে কিনা , বা তা ভঙ্গ হচ্ছে কিনা সে সব দেখা। এ সবের ব্যতিক্রম হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া।

এমপি সাহেবরা কোন প্রার্থীর পক্ষে কাজ করলে সেই প্রার্থীর প্রার্থীতা বাতিল হবে। কি সর্বনাশা সিদ্ধান্ত? । এমনতো হতে পারে কোন মন্ত্রী বা এমপি যদি কাউকে অপছন্দ করেন বা নিজের প্রার্থীকে জেতানোর জন্য তার অপছন্দের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করলেন ,তার প্রার্থীতা বাতিল হলো। তাহলে একজন মন্ত্রী বা এমপি এই কৌশল অবলম্বন করে সহজেই তার নিজের প্রার্থীকে জেতাতে পারবেন।

আমরা খুবই আশা করবো নির্বাচন কমিশনাররা তাদের অধিক্ষেত্রের কথা বলবেন , যে কথার আইনী ভিত্তি আছে সে সব কথা বলবেন।

রাজনৈতিক দলগুলোকে আমরা কি পরার্মর্শ দিবো, আর তারা আমাদের পরামর্শ শুনবে কেন ? আওয়ামী লীগের সারা দেশে তাদের দলে নেতা কর্মী , থিংক ট্যাংক আছে, শুশীল সমাজ আছে , সরকারি বিভিন্ন সংস্থা আছে যারা সকল তথ্য সরবরাহ করে। তাদের ফোরাম আছে , সে সব ফোরামে আলাপ আলোচনা করে তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আর বিএনপির আছে ওহী। যেটা নাজেল হয় লন্ডন থেকে। এদেশে যারা আছেন তারা উজীরে খামাখা। কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার তাদের নাই। লন্ডনে বসে বাংলাদেশের রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বা সঠিক হবে এটা বিএনপিরও সবাই বিশ^াস করে এ কথাও জোর দিয়ে বলা যাবেনা। বিএনপি যদি যথাযথ সম্মানের সাথে বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানকে নিষ্ক্রিয় রেখে দেশে রাজনীতি করে তাহলে বিষয়টা ইতিবাচক হবে।

আওয়ামী লীগকেও যা করতে হবে , এই যে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন যারা তাদের দু, আড়াই হাজার গুন আয় বেড়েছে। এটা খুবই অস্বাভাবিক। এটা জানা যাচ্ছে যারা গত নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন এবং এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তাদের । এর বাইরে দলীয় নেতা কর্মীদের বিশাল অংশ আছে তাদের সম্পর্কে অভিযোগ খুব কম আছে তা নয়। দলকে এই বিষয়টা ভাবতে হবে। জিরো টলারেন্সের বিষয়টা সব ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হওয়া উচিত।

দেশের সাধারণ মানুষের জন্য তো মাত্র ১দিন। যে দিন তারা ভোট দিতে পারে। তবে সব সময় তারা যে ভোট দিতে পারে তাও নয়। ভোট দিতে পারাটাই তাদের দাবী । তাদের আর তেমন কোন দাবী নাই। মতামত জানানোর আপাতত: উত্তম মাধ্যম হলো নির্বাচন। নির্বাচন বর্জন করে লাভ তেমন হওয়ার সম্ভবনা নাই। শাসক দলের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত থাকেনা। নমিনেশন পদ্ধতি থাকলে করারও কিছু থাকেনা। এবারে সুবিধা হয়েছে , নির্বাচনের মাধ্যমে শাসক দলের মধ্যেকার অপেক্ষাকৃত ভালো প্রার্থীকে বাছাই করার আপাত: সুযোগ এসেছে। সুতরাং নির্বাচনের কেন্দ্রে যান , পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিন। অনেক দলের প্রার্থী থাকলে ভালো হতো , কিন্তু হয়নি , যা হয়েছে তা মন্দের ভালো।

এ ইসলাম/টাঙ্গনটাইমস


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/