ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ও আকচা ইউনিয়নের মাঝামাঝি সুক নদীর উপর নির্মিত বুড়ির বাঁধে শুরু হয়েছে মাছ ধরার উৎসব।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) ভোরে বাঁধের গেট খুলে দেয়ায় এই উৎসবে যোগ দিয়েছেন আশে পাশের গ্রাম-শহরসহ দূরদূরান্ত থেকে আসা বিভিন্ন শ্রেণী পেশার কয়েক হাজার মানুষ। উৎসব চলবে ৪ থেকে ৫ দিন।
বুড়ির বাঁধ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অসংখ্য মানুষ মাছ ধরতে ব্যস্ত। এদের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশু রয়েছে। বাদ যাননি বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও। কারও হাতে পলো, কারও হাতে চাবিজাল, খেয়াজাল, টানাজাল বা ছেঁকাজাল। যাদের মাছ ধরার সরঞ্জাম নেই তারাও বসে নেই। খালি হাত দিয়েই কাঁদার মধ্যে মাছ খুঁজছে। আর নদীর পাড়ে হাজারো মানুষ ভিড় জমিয়েছে মাছ ধরা দেখতে। অনেকে মাছ না ধরলেও বন্ধু-বান্ধব ও স্বজনদের উৎসাহ দিচ্ছেন।
জানা যায়, ১৯৭৮ সালের দিকে শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষি জমির সেচ সুবিধার জন্য সদর উপজেলার আচকা ও চিলারং ইউনিয়নের মাঝামাঝি এলাকায় শুক নদীর উপর একটি জলকপাট (সুইসগেইট) নির্মাণ করা হয়। জলকপাটে আটকে থাকা সেই পানিতে প্রতিবছর মৎস্য অধিদফতরের উদ্যোগে বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা ছাড়া হয়। আর শীতের শুরুতেই বাঁধের পানি ছেড়ে দেওয়ার পর মাছ ধরার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এভাবেই প্রতিবছর চলে বুড়ির বাঁধে মাছ ধরার উৎসব।
পৌর শহরের বেশ কয়েকটি মহল্লা, সদর উপজেলার বেশকিছু ইউনিয়ন, ও জেলার বিভিন্ন উপজেলা, আশ পাশের উপজেলা থেকে আসা কয়েকজনের সাথে কথা হলে জানা যায়, মাছ ধরা উৎসবের কথা শুনে সোমবার রাতেই তারা এখানে এসেছে। পুঁটি মাছ, দেশী প্রজাতির মাছ, জালে আটকা পড়ছে বেশি।
পৌর শহরের টিকাপাড়া মহল্লার মো: মিঠুন সরকার বলেন, প্রতি বছর এখানে মাছ কিনতে আসি। দেশী প্রজাতির মাছ পাওয়া যায় কম দামে। দামও আছে ভালই। তারপরও মাছ কিনতে এসেছি দেশী প্রজাতির মাছ কিনেই বাড়ি ফিরবো।
ঠাকুরগাঁও আকচা এলাকার কযেকজনের সাথে কথা হলে তারা জানায়, মাছ ধরার উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিবছরের মতো এবারও মানুষের ঢল নেমেছে। এখানে কেউ মাছ ধরতে আসেন। কেউ বা আসেন মাছ ধরা দেখতে আবার কেউ আসেন কম দামে মাছ কিনতে। সেই যাই হোক এ সময় পুরো এলাকা উৎসবমুখর হয়ে উঠে।
ঠাকুরগাঁও জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আরাফাত উদ্দীন আহম্মেদ জানান, প্রতিবারেই এই বুড়ির বাঁধ এলাকায় মৎস্য দপ্তর থেকে পোনা ছাড়া হয়। এটি আমরা জুলাই মাসের দিকে দিয়ে থাকি এবং শীতের শুরুতেই আবার বাঁধের পানি ছেড়ে দেওয়ার পর মাছ ধরার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এভাবেই প্রতিবছর চলে বুড়ির বাঁধে মাছ ধরার উৎসব।
এ ইসলাম/টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/