• শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৪৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
৩য় দিনেও ঠাকুরগাঁওয়ে কোটা সংস্কারের দাবীতে হাজার হাজার শিক্ষার্থী খুলনায় সাংবাদিকদের কাজে বাধাকারিদের শক্ত হাতে দমন করা হবে-সিটি মেয়র বিদ্যালয়ে কর্মচারি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে অনিয়মের অভিযোগ! কোটা আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে ঠাকুরগাঁওয়ে গায়েবানা জানাজা রাজাকারের পক্ষে নেতৃত্বদানকারিদের বিরূদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন : পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোটা সংস্কার আন্দোলন: পথচারীসহ ৬ জন নিহতের ঘটনায় ব্লাস্টের উদ্বেগ হেলমেট লীগের হিংস্রতা রক্ষী বাহিনীকে ছাড়িয়ে গেছে-মুসলিম লীগ ঠাকুরগাঁওয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সড়ক অবরোধ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঠাকুরগাঁও জেলা আইন শৃংখলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত কোটা আন্দোলনে পলিটেকনিক্যালের শিক্ষার্থীরা

১৭ বছরে আগুনের গ্রাসে ২৭৪১ লাশ !

টাঙ্গন টাইমস ডেস্ক / ২৩০ Time View
Update : শুক্রবার, ১ মার্চ, ২০২৪

ফায়ার সার্ভেসের পরিসংখ্যান বলছে, গত ১৭ বছরে (২০০৬-২০২৩) অগ্নিদুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৭৪১ জনের, আহত হয়েছেন ১৪ হাজারের বেশি। প্রায় প্রতিটি বড় অগ্নিকাণ্ডের পর গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। এসব কমিটি নানা সুপারিশ দেয়। ফাইল চালাচালি হয় এই দপ্তর থেকে ওই দপ্তর। আশ্বাস দেওয়া হয়, দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার। কিন্তু অবস্থার বদল হয় না। যার সবশেষ নজির রাজধানীর বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের প্রাণহানি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন না হলে, প্রাণহানির ঝুঁকি কমবে না।

২০১০ সালের ৩ জুন রাতে পুরান ঢাকার নিমতলীতে ভয়াবহ এক অগ্নিকাণ্ডের ১২৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। ২০১২ সালের নভেম্বরে আশুলিয়ার

তাজরীন ফ্যাশন লিমিটেডে লাগা আগুন কেড়ে নেয় ১১১ পোশাক শ্রমিকের প্রাণ। ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় আগুন কেড়ে নেয় ৭৮টি তাজা প্রাণ। একই বছরের ২৮ মার্চ বনানীর ২২তলা এফআর টাওয়ারে অগ্নিদুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ২৭ জনের। এ ছাড়া গত কয়েক বছরে বঙ্গবাজার, নিউমার্কেটসহ ঢাকায় বেশ কয়েকটি বড় অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটেছে।

নিমতলীতে ভয়াবহ অগ্নিকা-ের পর ১৭ দফা সুপারিশ করেছিল তদন্ত কমিটি। কিন্তু এত বছরেও তদন্ত কমিটির সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন বা আলোর মুখ দেখেনি। ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ৪৮৫ জন অগ্নিদুর্ঘটনায় নিহত এবং ৩ হাজার ৮৬৮ জন আহত হয়েছেন। ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ১ হাজার ১২৮ জন নিহত ও ৫ হাজার ৮১৭ জন আহত হয়েছেন। ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৩৬৫ জন নিহত এবং ১ হাজার ৭৩২ জন আহত হয়েছেন।

২০১৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আগুনে মৃত্যু হয়েছে ৭৬৩ জনের; আহত হয়েছেন ২ হাজার ২২১ জন। এর মধ্যে ২০১৯ সালে নিহত ১৮৫ জন এবং আহত ৫৭১ জন। ২০২০ সালে মৃত্যু হয়েছে ১৫৪ জনের। আহতের সংখ্যা ৩৮৬। ২০২১ সালে মারা গেছে ২১৯ জন। আহত হয়েছেন ৫৭৬ জন। আর ২০২২ সালে অগ্নিদুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১০৩ জনের।

২০২৩ সালে ফায়ার সার্ভিস তাদের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, সারাদেশে আগুন লাগার বড় কারণ বৈদ্যুতিক গোলযোগ। ২০২২ সালে ২৪ হাজার ১০২টি অগ্নিদুর্ঘটনার ৩৮ শতাংশ ক্ষেত্রে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে। আগুনের ঘটনার দ্বিতীয় বড় কারণ বিড়ি ও সিগারেটের জ্বলন্ত টুকরা। ২০২২ সালে ১৬ শতাংশের কিছু বেশি অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটে এ কারণে। প্রায় ১৪ শতাংশ অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটেছে চুলা থেকে। সেটি বৈদ্যুতিক, গ্যাস বা মাটির চুলা হতে পারে। গ্যাস সরবরাহ লাইনও আগুনের ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণ। ২০২২ সালে ৩ শতাংশের কিছু বেশি আগুনের ঘটনা ঘটেছে গ্যাস সরবরাহ লাইন থেকে।

ফায়ার সার্ভিসের সাবেক মহাপরিচালক আহম্মদ আলী জানায়, অসাবধানতা ও অসতর্কতার পাশাপাশি যথাযথ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকার কারণে বেশি অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে। আর দুর্ঘটনার সময় নির্গমনের জন্য জরুরি ও প্রশস্ত সিঁড়ি না রাখা, সিঁড়ি বা চলাচলের পথে স্তূপীকৃত বিভিন্ন মালামাল রেখে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা, বিল্ডিং কোড না মেনে ভবন তৈরি, অনুমোদিত নকশাবহির্ভূতভাবে স্থাপনা নির্মাণ, বৈদ্যুতের শর্টসার্কিট, গ্যাস বিস্ফোরণ, দাহ্য কেমিক্যাল গোডাউন, রান্নাঘরসহ ছোটখাটো কারণে ঘটে যাচ্ছে বড় দুর্ঘটনা।

রাজধানীসহ সারাদেশে ভবন নির্মাণে অগ্নিনিরাপত্তার বিশদ পরিকল্পনা ও নিয়মিত তদারকি না করা হলে আগুনের ঝুঁকি কাটবে না বলে মনে করেন আহম্মদ আলী। তিনি বলেন, রাজউক ও ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষকে এই দায়িত্ব নিতে হবে। সরকারি সংস্থা তথা তদারকি প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মনীতি যথাযথভাবে পরিপালিত হচ্ছে কিনা তা আন্তরিকভাবে এবং নিয়মিত তদারকি করতে হবে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকে যুগোপযোগী করার পাশাপাশি মানুষের সচেতনতার বৃদ্ধি না পেলে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতেই থাকবে।

ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দীন জানান, বেইলি রোডের ওই ভবনে কাচ্চি ভাইসহ একাধিক রেস্টুরেন্ট ছিল, ছিল অসংখ্য সিলিন্ডারও। এ জন্য ভবনটি ছিল অগ্নিচুল্লির মতো। যার জন্য আগুন দাউ দাউ করে ছড়িয়ে পড়ে। এ ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কায় ওই ভবন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার নোটিশ করা হলেও বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি তারা। অগ্নিকা- নির্বাপণে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা তথা আধুনিক প্রযুক্তি না থাকার কারণে এত মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

আরএম/টাঙ্গন টাইমস


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/