• বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১১:০০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ঠাকুরগাঁওয়ে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী সভা ও পুরস্কার বিতরণী “কারাগারে কাতরাচ্ছেন ঠাকুরগাঁওয়ের পৌর মেয়র বন্যা” বেহাল হিলির রাস্তাঘাট, চরম দুর্ভোগে পথচারীরা স্থলবন্দরের গুদামে গুদামে চাল মজুত, হিলিতে চালের দামে ঊর্ধ্বগতি গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ জামাই-শাশুড়ি গ্রেফতার ঠাকুরগাঁও দলিল লেখকদের স্থাপনা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ, ধর্মঘটের ডাক বিদ্যালয়ে  যাওয়ার পথে বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল বাবা-মেয়ের ঠাকুরগাঁও জেলা নির্বাচন অফিসে দুদকের অভিযান: ঘুষ ও হয়রানির অভিযোগে তদন্ত, ভুক্তভোগীদের তাৎক্ষণিক সহায়তা তেঁতুলিয়ার শালবাহান ইউনিয়ন পরিষদের উন্মুক্ত বাজেট ঘোষণা গোদাগাড়ীতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় তিন প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

গণহত্যার ইতিহাস ভোলাতে পাকিস্তানিদেরই স্বাগত জানাচ্ছে ঢাকা

Reporter Name / ২৭০৭ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০২৫

টাঙ্গন ডেস্ক : বাঙালির চেতনার উন্মেষকেন্দ্র বলে নন্দিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি রচনারও আগে, পাকিস্তানের গায়ের জোরে উর্দু চাপিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে কিম্বা বাহান্নর ভাষা আন্দোলনের পীঠস্থান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পাকিস্তানি হানাদাররা তাই ‘অপারেশন সার্চলাইট বা গণহত্যা শুরুই করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতেই খুন হন অগণিত ছাত্র-ছাত্রী-শিক্ষক-কর্মচারী। শহীদদের স্মৃতি ভুলবার নয়। খান সেনার টার্গেটই ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে পঙ্গু করে তোলা।

অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের আমলে সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই এখন গলা মেলাতে চলেছে পাকিস্তানের সঙ্গে। বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে পূর্বের মতো পাকিস্তানের পারস্পরিক প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন এবং একাডেমিক গবেষণা কার্যক্রম চালু করা হলো’।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্ত ইতিহাসের নির্মম পরিহাস। শত সহস্র বাঙালির রক্তস্নাত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট অতীতে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পাকিস্তানের সাথে বিদ্যায়তনিক, গবেষণামূলক, সাংস্কৃতিক, ক্রীড়াকেন্দ্রিক সকল প্রকার যোগাযোগ ছিন্ন’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের সিন্ডিকেট সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহমেদ ১৮ ডিসেম্বর এবিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। বিজয়ের মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্ত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি চরম অসম্মান।

পাকিস্তানি বর্বরতার কারণে একাত্তরে ৩০ লাখ বাঙালী শহীদ হয়েছিলেন। ৪ লক্ষ বীরাঙ্গনার সম্ভ্রম লুন্ঠি হয়। নিজেদের অপকর্মের জন্য আজও ক্ষমা চায়নি পাকিস্তান। তবু সেই বর্বরতা ভুলে বাংলাদেশের অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের আমলে পাকিস্তানের সঙ্গে বাড়ছে মেলামেশা।

একাত্তরের গণহত্যা ভুলে অন্তর্র্বতী সরকার এখন ব্যস্ত ইসলাবাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপনে। অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের সঙ্গে বৈঠকে সেই বার্তাই দিলেন। ইতিমধ্যেই দুই দেশের সেনাপ্রধানরাও বৈঠক করেছেন। চলছে নানা পর্যায়ে বহু বৈঠক। পাকিস্তানি ও সেদেশের পণ্যে বাংলাদেশে অবাধ প্রবেশেরও সুযোগ করে দিয়েছে ড. ইউনূসের প্রশাসন।

ঢাকা ও ইসলামাবাদ বিমান চলাচলও এখন সময়ের অপেক্ষা। নৌপথে পণ্য চলাচল চলছে। ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূতের কার্যালয়ে সে দেশের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের কার্যকলাপও বেড়ে গিয়েছে। আসলে পাকিস্তান একাত্তরে পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে চায়। সে দেশের রাজনৈতিক ও সামরিক কর্মকর্তারা বহুবার প্রকাশ্যেই সে কথা বলেছেন। তাই এই বন্ধুত্বের চেষ্টা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার জন্য উদ্বেগজনক।

মনে রাখতে হবে, প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে ঐতিহাসিক কারণেই সুসম্পর্ক থাকলেও পাকিস্তান এবং তাদের মিত্র শক্তি চীন ও যুক্তরাষ্ট্র জন্মলগ্ন থেকেই বাংলাদেশের শত্রু। বন্ধুত্বের অভিনয় করলেও ইসলামাবাদের আসল মতলব কিন্তু রহস্যজনক। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে পাকিস্তানের এই সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের সিদ্ধান্ত দেশের পক্ষে বিপজ্জনক।

বাঙালির চেতনার উন্মেষস্থল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৪৮ সালেই উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে গর্জে উঠেছিল এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচন, ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে জনমত তৈরির প্রয়াস শুরু হয়েছিল। তাই ২৫ মার্চ অপারেশন সার্চ লাইটের শুরুতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বধ্যভূমিতে পরিণত করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। সেই রাতেই অন্তত ১০ জন শিক্ষককে হত্যা করা হয়।

বাঙালির চেতনাকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে জারুল হক ও জগন্নাথ হলে ব্যাপক হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। রোকেয়া হলের ছাত্রীরাও পাকিস্তানি বর্বরতার শিকার হন। ছাত্র-ছাত্রী- শিক্ষক ছাড়াও অগণিত বিশ্ববিদ্যালয় কর্মীও সেদিন প্রাণ হারান।

পাকিস্তানিদের সেই বর্বরতার কিছুটা বিবরণ মেলে যুক্তরাষ্ট্রের ঢাকার সেই সময়কার কনসাল জেনারেল আর্চার কে ব্লাডের ওয়াশিংটনে পররাষ্ট্র দপ্তরে পাঠানো প্রতিবেদনে। সেই প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, ‘রোকেয়া হলের রুমগুলোতে ছিল রক্তের দাগ। কারো পালানোর জন্য কোনো সুযোগ ছিল না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের একটি কক্ষে ছয়টি মেয়ের লাশ পা-বাঁধা ও নগ্ন অবস্থায় পাওয়া যায়’।

অগণিত শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বিজয়ের আনন্দও বিবর্ণ পাকিস্তানি বর্বরতার কাছে। একাত্তরের ডিসেম্বরেই জাতি হারায় তার বহু কৃতী সন্তানকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক- অধ্যাপকদের হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদারেরা। বাঙালি জাতিকে পঙ্গু করে দেওয়ার লক্ষ্যেই রাজাকার আর আল-বাদরদের সহযোগিতায় সেদিন বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে খান সেনারা। কারণ তারা জানতো, বাঙালির আত্মমর্যাদার আঁতুর ঘর হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সেই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিচারপতি আবু সাইদ চৌধুরীর মতো ব্যক্তিত্বের হাত ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি তখন খ্যাতির শীর্ষে। তাই সেই প্রতিষ্ঠানকেই ধ্বংস করতে চেয়েছিল পাকিস্তান।

আসলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম থেকেই দেশপ্রেম ও বাঙালির আত্মমর্যাদাকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়। বাহান্নর ভাষা আন্দোলন ছাড়াও যখনই দেশ ও জাতির জন্য বিপর্যয় নেমে এসেছে তখনই ঝাঁপিয়ে পড়েছেন এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কৃতীরা। ১৯৬৯ সালের শুরুতে ১১ দফা দাবিতে আন্দোলন সূচিত হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সেই ছাত্র আন্দোলনের হাত ধরেই গণঅভ্যুত্থানের সূচনা হয়।

বাঙালি জাতি গর্বের সঙ্গে বলে ওঠেন, ‘আমার দেশ, তোমার দেশ, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ এবং ‘জাগো জাগো বাঙালি জাগো’ এ ধরনের স্লোগানে। ‘জয় বাংলা’ স্লোগানও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। একাত্তরে ২৫ মার্চেপ সেই কালো রাতে খান সেনার বর্বরতাও দাবিয়ে রাখতে পারেনি অপরাজেয় বাংলার সুসন্তানদের। একাত্তরের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ও বেশ কয়েকজন অধ্যাপক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১০ এপ্রিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠনের ঘোষণাও দিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র তাজউদ্দীন আহমদ। বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতিদানের অধিকার আদায়ে বলিষ্ঠ সংগ্রামের যে সূচনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হয়েছিল সেটাই পূর্ণতা লাভ করে একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর।

মানব সভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে নৃশংস ঘটনার জন্য আজও ক্ষমা চায়নি পাকিস্তান। তবু তাদের জন্য দরোদ উতলে উঠছে বাংলাদেশের অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের। পাকিস্তান এবং তাদের দাতা দেশ চীন আসলে বাংলাদেশের অস্থিরতার সুযোগ নিতে চাইছে।

বীর শহীদদের প্রতি চরম অসম্মান শুধু নয়, একাত্তরের পরাজিত শক্তির কাছে দেশের স্বাধীনতা জিম্মি রাখার ষড়যন্ত্রও। ড. ইউনূসদের পাকিস্তান-প্রেমে অনেকে তাই উদ্বিগ্নও। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক ছাত্র-ছাত্রী-শিক্ষক- শিক্ষিকা-কর্মী-শুভানুধ্যায়ীরা লজ্জিতও।

এ ইসলাম/টাঙ্গন টাইমস


আপনার মতামত লিখুন :

7 responses to “গণহত্যার ইতিহাস ভোলাতে পাকিস্তানিদেরই স্বাগত জানাচ্ছে ঢাকা”

  1. Its like you learn my thoughts! You seem to grasp so much about this, such as you wrote the guide in it or something. I feel that you can do with some to drive the message home a little bit, however other than that, that is wonderful blog. An excellent read. I’ll certainly be back.

  2. I like this weblog its a master peace ! Glad I observed this on google .

  3. AndrewNes says:

    buy antibiotics over the counter buy antibiotics over the counter or buy antibiotics over the counter
    https://images.google.mu/url?sa=t&url=https://biotpharm.com buy antibiotics from canada
    antibiotic without presription buy antibiotics for uti and get antibiotics without seeing a doctor Over the counter antibiotics for infection

  4. bl6zx says:

    can i buy cheap clomiphene without dr prescription buying cheap clomid price cost cheap clomid without insurance where buy cheap clomiphene without dr prescription how to get generic clomid price where to buy clomiphene no prescription clomiphene only cycle

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
HTML Snippets Powered By : XYZScripts.com
https://slotbet.online/
HTML Snippets Powered By : XYZScripts.com