• বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০০ পূর্বাহ্ন

২০৩০ সালের মধ্যে নারী-পুরুষের সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে

Reporter Name / ১৪৪২ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৩

ঢাকা প্রতিনিধি : মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভীন বলেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেয়া ১০ টি প্রকল্পের মধ্যে একটি হলো বাল্য-বিবাহ রোধ করা। ২০৩০ সালের মধ্যে সকল ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হলে আমাদের প্রাথমিক দায়িত্ব হলো বাল্য-বিবাহ রোধ করা।

বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় সিরডাপ অডিটোরিয়াম, তোপখানা রোড, ঢাকায় নারী-নির্যাতন রোধে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম ও বøাস্ট এর যৌথ আয়োজনে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

তিনি বলেন বাল্য-বিবাহ রোধে সরকারী এবং বেসরকারী সংগঠনের কার্যক্রম এবং তথ্যসমূহের মধ্যে সমন্বয় করে একটি শক্তিশালী একক ডেটা-বেইজ তৈরী করা এবং বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ এর সুষ্ঠু বাস্তবায়নের নিমিত্তে সরকারী এবং বেসরকারী হেল্পলাইনের সমন্বয় সাধন প্রয়োজন।

প্রধান অতিথি বলেন, আমরা ১৬ দিনব্যপী নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষে অবস্থান করছি। এই সময়ে এ বিষয়ে কথা বলা খুবই সময়পোযোগী। সেই লক্ষ্যে আমরা কিশোর-কিশোরী ক্লাবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলা এবং আত্মরক্ষামূলক দক্ষতা শিখানো হচ্ছে যা আমাদের জন্য একটি বড় অর্জন। তিনি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের প্রকল্প অফিসারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন ১০৯ এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সকল জেলা পর্যায়ে সেবাসমুহ নিশ্চিত করার কাজ করার জন্য কাজ করতে হবে।

“বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে সরকারী এবং বেসরকারী হেল্পলাইনের সমন্বয়” বিষয়ক ভিডিও উপস্থাপনা করেন মালয়শিয়ার ইউনিভার্সিটি অফ মনাশ এর গবেষক প্রফেসর ড. নিয়াজ আসাদুল্লাহ। তিনি মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণকারিদের মাঝে বাল্য-বিবাহ সম্পর্কে তথ্যের অভিগম্যতা, কিশোর-কিশোরী ক্লাব, জাতীয় এবং জেলা পর্যায়ের কমিটিগুলোকে আরো সক্রিয় করা এবং ধারা ১৯ এ যে বিশেষ ক্ষেত্রে ১৮ বছরের নিচে যে বিবাহের কথা বলা হয়েছে তাকে বিস্তারিত বিশ্লেষণ করা জরুরী বলে অভিমত প্রকাশ করেন।

মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের পরিচালক (যুগ্মসচিব) জাকিয়া আফরোজ বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন বাল্য-বিবাহের বিষয়টি অনেক ব্যাপক। তিনি বরেন হেল্পলাইন এবং বিভিন্ন সংগঠনের সমন্বয় করা এবং এটিকে আরো কার্যকর করা প্রয়োজন। একটি সমন্বিত ডেটা-বেইজ গড়ে তোলার জন্য ডেভলাপম্যন্ট পার্টনারদের মধ্যে সমন্বয় সাধনেরও প্রয়োজনীয়তার কথা তিনি তুলে ধরেন তিনি।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প পরিচালক যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন অধিশাখা) ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী বিশেষ অতিথিদের বক্তব্যে বলেন, নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম, বাল্য-বিবাহ রোধে আমাদের প্রত্যেকের সমন্বয়ের যে বক্তব্য উঠে এসেছে তা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে বলে বিশ^াস করেন তিনি। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি গোলের সাথে মিল রেখে বাল্য-বিবাহ পুরোপুরি নিঃশ্বেষ করা আমাদের বর্তমান লক্ষ্য। বাল্য-বিবাহের পিছনে কী কী কারণ আছে তা প্রান্তিক পর্যায় থেকে অনুসন্ধান করে পলিসি তৈরী করতে হবে।

তিনি বলেন ২০১৭ সালের আইন, ২০১৮ এর রুলস বাল্য-বিবাহ রোধে বিভিন্ন কমিটির কথা বলা আছে। এই কমিটিগুলোকে সক্রিয় এবং শক্তিশালী করার জন্য কাজ করা হচ্ছে। আমরা বিবাহ-নিবন্ধনকে অনলাইনে করার কাজ করছি। কাজীদের নিবন্ধনকে ডিজিটালাইজ করতে পারলে আমাদের এইক্ষেত্রে বিশাল সাফল্য আসবে বলে আশা করা যাচ্ছে। সরকারী কর্মচারীদের যতগুলো প্রশিক্ষণ আছে সবখানে আমরা বাল্য-বিবাহ রোধের বিষয় নিয়ে আলোচনা করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ৯৯৯ এবং ৩৩৩’র সাথে আমাদের এমওইউ করা আছে যাতে করে জরুরী ঘটনা সম্পর্কে আমাদের মধ্যে সংহতি থাকে।

মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (যুগ্মসচিব) সালেহা বিনতে সিরাজ বলেন, আদমশুমারীতে বিয়ের বয়সটা আলাদা করে কোনো তথ্য নেয়ার পরিকল্পনা করা যেতে পারে তা হলে ১৮ বছরের নিচে বাল্য-বিবাহের সংখ্যা কতটুকু তার একটি সঠিক ধারণা পাওয়া যেতে পারে। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অনেকগুলো কাজের মধ্যে অন্যতম কাজ হচ্ছে বাল্য-বিবাহ রোধ করা এখানে আইন প্রয়োগ থেকে শুরু করে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা কাজ করছি।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের এসপিএস স্পেশালিস্ট (এটুআই) উপ-সচিব খন্দকার মনোয়ার মোরশেদ বলেন জাতীয় এবং ইমার্জেন্সী হেল্পলাইনে সরকারী যতগুলো সেবা আছে সবগুলি সেবাই পাওয়া যাবে। তার ধারাবাহিকতায় ৩৩৩ এবং ১০৯ এর মতো হেল্পলাইন নাম্বারকে প্রান্তিক পর্যায়ে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য আমরা কাজ করছি যাতে ইন্টারনেট বা স্মার্টফোন না থাকলেও তাদের কাছে সাহায্য পৌছাতে পারে।

বøাস্ট’র আইন উপদেষ্টা এস এম রেজাউল করিম বলেন, সরকারকে তার কাজে সহায়তা করার জন্য এবং দেশের সকল পর্যায়ে সরকারের এই কার্যক্রম পৌছে দেয়ার জন্য বøাস্ট সরকারের সাথে কাজ করে আসছে যাতে বাল্য-বিবাহ, যৌন সহিংসতার মতো অপরাধগুলোকে নির্মূল করা যায়। সকলকে এই উদ্দেশ্যে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি মতবিনিময় সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

বøাস্টের এডভোকেসি উপদেষ্টা এডভোকেট তাজুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় উক্ত মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন নারী নির্যাতন প্রতিরোধ প্রকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রামের প্রোগ্রাম অফিসার রাইসুল ইসলাম এবং সভার উদ্দেশ্য ও প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন বøাস্টের পরিচালক (এডভোকেসী ও কমিউনিকেশন) মাহবুবা আক্তার।

সভায় নারী-নির্যাতন রোধে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম ও বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (বøাস্ট) এর মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধির জন্য একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সাক্ষরিত হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
HTML Snippets Powered By : XYZScripts.com
https://slotbet.online/
HTML Snippets Powered By : XYZScripts.com