হজ্জে লাখ বিশেক আর হজ্জ ছাড়া অন্য সময়ে প্রতিদিন লাখো মানুষ সারা দুনিয়া থেকে ওমরা করতে যায় মক্কা শরীফে। কিছু অংশ ছাড়া বাঁকীরা আসে জীবনের প্রথম। সবাই শিক্ষিত তাও নয় আবার অন্য কোথাও অনুশীলন করে আসে তাও নয়। এতো মানুষের ব্যবস্থাপনা থাকা খাওয়া , পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা , পয়:প্রনালী , পানীয় জল সরবরাহ , স্বাস্থ্য বিধি , নিরাপত্তা এসব মোটেও সহজ নয়। তবে এখানে নিরাপত্তা শতভাগ নিশ্চিত। সৌদি সরকার হলেও মুলত রাজ পরিবারের তত্বাবধানেই মক্কা মদিনা পরিচালিত হয়। হারাম শরীফের লাগোয়া রাজ পরিবারের বাসস্থান। ১৪০০ বছর ধরে তারা তা করে আসছে। মাঝে মধ্যে কিছু ব্যত্যয় হলেও বিষয়টি স্থানান্তরের উপায় নাই সে কারণে তারা কাটিয়ে উঠেছে।
প্রথমত : পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের দক্ষতা। সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। মনে হলো সৌদি পুলিশের সাথে অধিকাংশ বাংলাদেশীরা পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করে। তারা জ্যাকেট পড়ে থাকে সে জন্য চিনতে কষ্ট হয়না। তারা এতো ব্যস্তোতার মধ্যে থাকে তাদের সাথে ৫/১০ মিনিট আলাপ করার কোন সুযোগই নাই। অনেকের সাথে কথা বলেছি। বাংলাদেশের অনেক কর্মী মাস্ক পড়ে থাকে। তাদের কাজে একটু জড়তাও আছে। তবে পরে বুঝেছি এরা দালালের মাধ্যমে অনেক আশা নিয়ে এসেছে, এখানে এসে কোম্পানীর মাধ্যমে এই কাজ পেয়েছে। প্রতিদিন দেশ থেকে লোক জন যায় , তাদেরকে চিনতে পারে এই শংকায় তারা মাস্ক পড়ে। আর যারা ২/৩ বা তার বেশী বছর সময় ধরে আছে তারা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়। আমাদের দেশের মতো অফিসের কাজ বাদ দিয়ে চা খেতে যাওয়ার কোন বিধান নাই। পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের দক্ষতার প্রশংসা না করে পারা যায়না। হারাম শরীফে সব সময় লাখ খানেক লোক চলাচল করে। তাদের চলাচলের ব্যাঘাত না করে নিয়মিত পরিস্কার করার কৌশল সত্যিই প্রশংসনীয়। এ কাজে তারা যন্ত্রপাতিও ব্যবহার করে।
দ্বিতীয়ত: মাতাফ এলাকা পরিষ্কার এবং নামাজের সময় তওয়াফকারীদের সুনিপুনভাবে পুরুষদের ভিতর থেকে মহিলাদের বের করে আনা এই কাজটা যে কতো জটিল সেটা না দেখলে বোঝা যাবেনা। আবার প্রচন্ড ভীড় হলেও পুলিশেরা কৌশলে ভিতরের কোন জায়গা খালি রাখেনা। এখানে উত্তর দক্ষিন বিবেচনার কোন প্রয়োজন নাই। কেননা চারিদিক থেকেই নামাজ পড়া যায়। লাখো মানুষ নামাজ পড়ে , লাইন বাঁকা হবার সুযোগ নাই। কেননা হারাম শরীফের ভিতর থেকে বাইরে পর্যন্ত কেবলামুখী করে লাইন টানা আছে।
তৃতীয়ত : পুলিশের বিষয়টা বললে ওদের ব্যবস্থাপনার তারিফ করতেই হবে। তবে একটা বিষয়ে আমার অনুযোগ রয়েছে। তা হলো , কোথাও কোন সাউন্ড বক্স ব্যবহার হয়না। পুলিশরা বেশ চিৎকার করেই কথা বলে। শব্দ শুনলে মনে হয় রাগত: স্বরেই তারা কথা বলে। ওদের সম্বোধনটা হাজী হাজীই, সারা দুনিয়া থেকে লোক যায় যে সব দেশ থেকে বেশী লোক যায় সে ভাষায় কথা বললে কাজটা সহজ হয়। ওরা আরবী ছাড়া আর কোন ভাষা দুনিযাতে আছে বলে মনেই করেনা। অল্প কিছু শব্দ শিখলেইতো কাজটা সহজ হয়। শুধু এখানে নয় কোথাও সৌদি পুলিশ আরবী ছাড়া অন্য কোন ভাষায় কথা বলেনা। মন্দের ভালো ভিতরের নির্দেশনাগুলো ইংরেজিতে আছে।
চতুর্থত: পানীয় জলের ব্যবস্থাপনা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। হারাম শরীফের ভিতরে এবং বাইরে এমনকি মাতাফ এলাকায় অসংখ্য জায়গায় জমজমের ঠান্ডা এবং নরমাল পানি আছে , ওয়ান টাইম গøাস আছে। যত খুশী পানি খাবেন, হোটেল রুমে পানি খাওয়ার জন্য নিয়ে আসবেন। হারাম শরীফের বাইরের ওয়াল ঘেসে পানি দেওয়ার জায়গা আছে। তবে পানির ট্যাপে সেন্সর লাগানো আছে ফলে পানি নষ্ট করার সুযোগ নাই। পািন যাতে নষ্ট না হয় সে জন্য সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেওয়া আছে। পানি ব্যবস্থাপনার জন্য অসংখ্য কর্মী আছে।
পঞ্চমত: ওয়াক্তের নামাজের সময় নামাজের নির্ধারিত জায়গা ছাড়াও সব জায়গাতেই হাজী সাহেবেরা নামাজ পড়েন। তবে পুলিশ চলাচলের রাস্তা বন্ধ হতে দেয়না। নামাজের নির্ধারিত জায়গায় অসংখ্য ফোল্ডিং চেয়ার রাখা আছে। অনেক মানুষকে বাধ্য হয়ে চেয়ারে নামাজ পড়তে হয়। আমাদের দেশে অধিকাংশ আধামুর্খ মৌলভী সাহেবরা চেয়ারে নামাজ পড়াকে হারাম বলে ওয়াজ করেন। তারা তো ভাড়া নিয়ে মাহফিলে বক্তৃতা করেন এবং নির্দেশ দেন তাদের এলাকার মসজিদের সকল চেয়ার ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য। (বগুড়ার মৌলভী বজলুল করিমের গাল গল্পে ভরা ওয়াজ শুনুন) মসজিদে এবং অন্যান্য জায়গায় প্রচুর কোরান শরীফ সাজানো আছে অনেকে পড়ছেন। এই চেয়ার এবং কোরান শরীফ জায়গামতো রাখার জন্য আলাদা কর্মী আছে।
ছষ্ঠতম: বায়তুল্লাহ শরীফ তওয়াফ চলে ৩৬৫/২৪ ঘন্টা। যারা হেঁটে তওয়াফ করতে অক্ষম তারা ইচ্ছা করলে হুইল চেয়ার ভাড়া করবেন। তারা হোটেল থেকে তুলে নিবে এবং সকল কার্যক্রম শেষে হোটেলে পৌছে দিবে। ৮০ থেকে ১০০ রিয়াল গুনতে হবে। হুইল চেয়ারে তওয়াফ হয় ২ এবং ৩ তলায় নির্ধারিত জায়গা আছে। এই ব্যবসাটা পাকিস্তানীদের দখলে।
সপ্তমত: গেট , হারাম শরীফে ঢোকার এবং বের হওয়ার জন্য অসংখ্য গেট আছে। এর মধ্যে বড়ো গেট হলো কিং আব্দুল আজিজ গেট (এটা সবচে বড়ো) কিং ফাহাদ গেট , ওমরা গেট ইত্যাদি তবে প্রধান গেট গুলোর নাম ভিতরেও লেখা আছে , আমরা ৯৭/৯৮ নং গেট ব্যবহার করেছি বেশী। কারণ আমাদের থাকার জায়গা এদিকেই।
অষ্টমত: নামাজ , অনবরত নামাজ হচ্ছে। তবে মুলত: জামাতেই সবাই নামাজ পড়ার চেষ্টা করে। এখানে নামাজের সুন্নত নফল নাই। আজানের পর খুব বেশী দেরী হয়না। আবার খুব বেশী লম্বা কেরাতও হয়না,অধিকাংশ নামাজীর নামাজ কছর ফরজ হলেও জামাতে নামাজ পড়ার জন্য পুরো নামাজই পড়তে হয়। অবশ্য এটাই বিধান। তবে একামত দেওয়ার সময় বাংলাদেশে তকবির ২ বার করে দেয় এখানে ১ বার করে। আর প্রতি ওয়াক্তে ফরজ নামাজের সঙ্গে সঙ্গে জানাজার নামাজ হয়। আমাদের দেশের মতো জানাজার আগে যেমন মুরদার চৌদ্দ পুরুষের পরিচিতি , সমাজে তার অবদান ইত্যাদি বিষয়ে মুছল্লীদের বিরক্তি উৎপাদন চলে, এমনকি মুছল্লীদের তরফ থেকে দাবীও ওঠে নামাজ শুরু করার জন্য। সালাম ফেরানো হয় একদিকে। একবারে কতজনের জানাজা হয় , কার জানাজা হয় এসব জানার কোন উপায় নাই। নামাজ শেষে মুরদাগুলোকে গাড়ীতে করে মক্কা শরীফে জান্নাতে মোয়াল্লাম এবং মদিনাতে জান্নাতুল বাকীতে দাফন করা হয়। আমাদের দেশে কবর বেঁেধ দেওয়া হয় , সেখানে নাম ঠিকানা , জন্ম মৃত্যুর তারিখ ইত্যাদি থাকে। জান্নাতুল মোয়াল্লাতে কেবল মাত্র বিবি খাদিজা এবং তার ছেলেদের কবরের জায়গাটা একটু ঘেরা দেওয়া আছে। আর কিছু নাই। বিবি খাদিজা প্রথম ইসলাম কবুলকারী নারী। এখানে ৩টি কবর আছে। একটা বিবি খাদিজার অন্য ২টি তাঁর দুই ছেলের , এ টুকু জানা যায়। তবে তার কবর কোনটা সেটা বোঝার কোন উপায় নাই। এ ছাড়া মক্কা মদিনায় কবরের জায়গাটা একটু উঁচু এবং মাথার দিকে একটা পাথর আছে। কোন কবর কার এটা বোঝার কোন উপায় নাই।
নবমতম : অজুখানা: হারাম শরীফের বাইরে চারিদিকে প্রচুর অজুখানা আছে। একই সঙ্গে আছে বাথরুম , টয়লেট। তবে এসব মাটির নীচে। এমনকি লিফট দিয়ে উঠা নামা করতে হয়। পুরুষ এবং মহিলাদের আলাদা আলাদা ব্যবস্থা। এই সব স্থাপনা ব্যবহার উপযোগী রাখার জন্য প্রচুর পরিচ্ছন্নতা কর্মী কাজ করছেন খুবই নিষ্টার সাথে। হাই কমোড, লো প্যান সবই আছে ।
দশমত : ইফতার এবং খাবার বিতরণ : হারাম শরীফে সকল মসজিদে ইফতার দেওয়া হয়। এই ইফতার দেওয়ার জন্য আলাদা কর্মী আছে। খুবই সুচারুভাবে দ্বায়িত্ব পালন করে। সুন্দর সুন্দর প্যাকেট দেয় আপনি ইচ্ছা করলে নিয়ে আসতে পারবেন। যতটুকু প্রয়োজন খাবেন। রোজার সময়ের ইফতারী ব্যবস্থাপনা সত্যিই অবাক করার মতো বিষয়। কেন্দ্রীয়ভাবে সরবরাহতো থাকেই , অনেক প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিও প্রচুর ইফতারী ও খাবার দেন। আর সারা বছর রাস্তায় খেজুর , পানি বিতরণ হয়। প্রথম প্রথম মনে হয়েছিল এসব বোধহয় দুস্থ: বা গরীবদের জন্য। পরে জেনেছি বিষয়টা সে রকম নয়। মক্কা মদিনায় আগতদের আল্লাহর মেহমান হিসাবে বিবেচনা করা হয়, এটা গ্রহণ করলে বিতরণকারী প্রশান্তি অনুভব করে। সারা বছর প্রতিদিন কোন কোন কোম্পানী বা ব্যক্তি খাবারের প্যাকেট বিতরণ করে বিশেষত: সকালের নাস্তার জন্য। হাজার হাজার মানুষ লাইন ধরে তা নেয় কিন্তু কোন হৈ চৈ বা বিশৃঙ্খলা হতে দেখিনি। খাবারের প্যাকেটে খিচুরি, পোলাও, মাংশ সবই থাকে, এবং একজনের পক্ষে খাওয়াও সহজ নয়। ভাববার কোন কারণ নাই যে এই সব ফ্রিতে দেওয়া খাবার গরীব বা কাঙ্গালদের জন্য তৈরি করা হয় তা নয় , সবই মানসম্মত খাবার, হোটেল থেকে কিনে যেটা খাবেন তার চেয়ে কোন অংশেই কম নয়। আর খেজুর বিতরণতো নেশার মতো। হারাম শরীফের মসজিদগুলোতেও প্রচুর খাবার বিতরণ করা হয়। বিভিন্ন স্থাপনাতেও খাবার বিতরণ করা হয়। যেমন ওহোদ পাহাড় দেখতে গিয়েও খাবারের প্যাকেট বিতরণ দেখেছি এবং খেয়েছি। তবে একটা বিষয় দেখেছি , আমাদেও দেশে খাবার বিতরণ করতে করতে শেষ হলে শুরু হয় বিপত্তি , মানুষের ভীড় হবে , কেন শেষ হলো সে প্রশ্ন দেখা দেবে। কেউ ২ প্যাকেট নিবে , হাঙ্গামা করবে , হৈ চৈ করবে। কেনো শেষ হলো , আমরা পেলামনা কেন? এসব প্রশ্ন কেউ তোলেনা। প্যাকেট শেষ তো সব শেষ।
এগারতম: হারাম শরীফ সংলগ্ন রাজ পরিবারের আধুনিক প্রাসাদ এবং রয়েল ক্লক টাওয়ার তৈরির কারণে এবং চারিদিকে যে ভাবে হোটেল নির্মান করা হয়েছে তাতে হারাম শরীফের পরিধি আর বাড়ানো সম্ভব নয়। সে কারণেই হয়তো প্রতি বছর সৌদি সরকার সারা পৃথিবী থেকে কত হাজী হজ¦ করতে পারবে সে সংখ্যা নির্ধারণ করে দেয়। কেননা ধারণ ক্ষমতাতো অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে। রাজ পরিবারের ভবন থেকে হারাম শরীফে আসার ভুগর্ভস্থ রাস্তা আছে। তারা সরাসরি এই রাস্তা দিয়ে এসে জামাতে যোগ দেন। তাদের জন্য আলাদা জায়গাও থাকে।
বারতম: রয়েল ক্লক টাওয়ার : অনন্য স্থাপনা। বর্তমান সময়ে সৌদি আরবের সবচে উঁচু স্থাপনা। আগেই বলেছি,শহরে ঢুকতেই অনেক দুর থেকে আগে নজরে পড়বে ক্লক টাওয়ার এবং জানতে পারবেন এবং শুনবেন ওই ক্লক টাওয়ারের পাশেই কাবা শরীফ। পাহাড়ী আকঁ বাঁকা রাস্তা , সে কারণে ঘুরে ঘুরে বাস চলে , আর সব দিক থেকেই এই টাওয়ার দেখা যায়। তবে এই ইনফরমেশন টা শুনতে ভালো লাগেনা। কেননা ক্লক টাওয়ারের পাশে কাবা শরীফ না হয়ে যদি বলা যেতো কাবা শরীফের পাশেই ক্লক টাওয়ার।
তেরতম: নবীজীর বাড়ীটাকে লাইব্রেরী বানানো হয়েছে , লাইব্রেরী বানানোর কি আর কোন জায়গা ছিলনা। একক সিদ্ধান্তেই সৌদি সরকার রাজ পরিবার তা করেছে। সারা দুনিয়ার সকল মুসলমানের আকাংখ্যা হারাম শরীফে নামাজ পড়া , নবীজির বাড়ী সহ ইসলাম ধর্মের সেই সব স্থাপনা চোখে দেখা সব মানুষের আরাধ্য বিষয়। মুল স্থাপনাগুলো রেখে সেখানে সুপার ষ্ট্রকচার তৈরি করা যেতো। আবু জেহেলের বাড়ীতে কেনো টয়লেট বানাতে হলো তা আমাদের বোধগম্য নয়। আবার জমজম কুপের মুখ সিলগালা করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জায়গা একটা রেলিং দিয়ে বাইরে থেকে দেখা যায় এমনটা করা যেতো। তার পর জ্বীন মসজিদ এবং মসজিদে সাজারার ক্ষেত্রেও একই কথা। মসজিদগুলো রেখে বাইরে দিয়ে সুপারস্ট্রাকচার করে মসজিদ নির্মান করা যেতো। এরকম সব স্খপনার ক্ষেত্রে একই কথা। আবার তায়েফে বুড়ির বাড়ী নবী দেখানে বসে পরামর্শ করতেন , যেখানে ছোট একটা পাথরে বিশাল একটা পাথর আটকে আছে এই সব নিদর্শনগুলো সংরক্ষণে যতেœর ছাপ নাই। প্রতিদিন হাজারো মানুষ এ সব জায়গায় ঘুরে বেড়ায়, স্থাপনাগুলো বিকৃত হচ্ছে। আঙ্গুরের বাগানে যাওয়ার রাস্তা, এই সব স্থাপনায় অসংখ্য মানুষ প্রতিদিন দেখতে যায়। সে সব জায়গা সুপার ষ্ট্রাকচার করে উপর দিয়ে রেলিং ব্রিজ করে দিলে দর্শনার্থীরা সহজে হাটতে পারতো , দেখতে পারতো । আরো ঘাটতি হলো কোথায় কোন বিল বোর্ড নাই। কোন সাইনবোর্ড নাই। কোন স্থাপনা সম্পর্কে কোন বর্ণনা নাই। হযরত আলীর বাড়ী রাস্তার সাথে লাগানো। কেবল নেট দিয়ে ঘেরা আছে। কোন বিলবোর্ড নাই। এই স্থাপনাটা সুন্দর করে ঘেরা দিয়ে সংরক্ষন করা যেতো। মসজিদে কুবা , মসজিদে কেবলাতাইন এসবের ক্ষেত্রেও এই কথাই প্রযোজ্য। মুল স্থাপনাটা রেখে এর পাশে বা একে ভিতরে রেখে বর্তমান স্থাপনাগুলো করলে ভালো হতো।
চৌদ্দতম: হেরা পর্বতের সেই গুহা যেখানে কোরান নাজিল হয়েছিল, এই গুহাটা দেখা একজন মুসলমানের জন্য কতটা আবেগের এবং র্মর্যাদার এটা নিয়ে প্রশ্ন করার তো সুযোগই নাই। যারা হজ¦ করতে যান তাদের সবারই আকাংখ্যা এই গুহাটা কাছে থেকে দেখবেন। কিন্তু উঠতে পারেননা। কেন এখানে এটা চলন্ত সিঁড়ি স্থাপন করে দেওয়া কি সৌদি সরকারের পক্ষে অসম্ভব বিষয়। এতে করে সকল দর্শনার্থী চলন্ত সিঁড়ি দিয়ে উঠবেন , নিজের চোখে কোরান নাজেলের গুহাটা দেখবেন, তার আজীবনের লালিত বাসনা পুর্ন হবে। বিনা মুল্যে না পারলে টিকিটের বিনিময়ে হলেও এটা করা উচিত বলে আমি মনে করি।
পনেরতম: শিশুপুত্র হযরত ইসমাইল (আ:) কে পাহাড়ের পাদদেশে রেখে বিবি হাজেরা পানির খোঁজে সাফা মারওয়া পাহাড়ে দৌড়াদৌড়ি করেছেন। এর মধ্যে শিশু ইসমাইল নজরের বাইরে গেলে তার নিরাপত্তার বিষয় ভেবে সেই রাস্তাটুকু দৌড়ে পার হয়েছেন। সে কারণে সাফা মারওয়া তওয়াফকারীরা মাঝপথে একটু দৌড়ে যান। মাঝখানে সবুজ বাতি দিয়ে কিছু রাস্তা চিহ্নিত করা আছে, যেখানে একটু দৌড়ে যেতে হয়। হাজ¦ীদের সাফা মারওয়া তওয়াফ করতে হয় ৭বার। সাফা থেকে শুরু হয়ে মারওয়া হলে ১ তওয়াফ আবার সাফায় গেলে ১ তওয়াফ এভাবে মোট ৭ তওয়াফ এবং উভয় পাহাড়ে দোওয়া করার নির্দেশনা মেনে তওয়াফ শেষ হয়। এখন অবশ্য আর পাহাড় নেই। দুই পাহাড়েরই কেবল মাথা বের করা আছে এবং গোটা রাস্তা পাকা করা হয়েছে। সাফা মারওয়া তওয়াফ শেষ করে মাথা নেড়ে করা বা চুল ছোট করে কেটে ওমরার কার্যক্রম শেষ হয়ে যায়।
এ ইসলাম/টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/