রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি:অনেকদিন হয়ে গেল কারো কাছে চিঠি লেখা হয় না। একসময় আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের কাছে চিঠি লিখে খোঁজ-খবর নিতাম। লিখতাম—কেমন আছেন? কী খবর? সেই চিঠি লেখার অভ্যাসটাই যেন হারিয়ে গেছে। আধুনিক প্রযুক্তির এই যুগে মোবাইল ফোনের সহজলভ্যতায় সবকিছু হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। ফোন করলেই খবর পাওয়া যায়, তাই চিঠির আর প্রয়োজন পড়ে না।
মোবাইল ফোন—বিজ্ঞানের এক অবিশ্বাস্য আবিষ্কার। এখন এটি আমাদের যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। যখন থেকে বাজারে মোবাইল ফোন এসেছে, তখন থেকেই চিঠির ব্যবহার ক্রমাগত কমতে থাকে। বর্তমানে কেবল কিছু প্রয়োজনীয় সরকারি চিঠি, নোটিশ বা অফিসিয়াল পত্রই ডাকযোগে পাঠানো হয়। ব্যক্তি পর্যায়ে চিঠি লেখার চল প্রায় বন্ধই হয়ে গেছে।
আজকের ছোট্ট শিশুরা জানেই না চিঠি কী! জানে না কীভাবে চিঠি লিখতে হয়, কোথা থেকে খাম কিনতে হয়, খামের মুখে আঠা লাগিয়ে সেটা কোথায় ফেলা হয়। তাদের চোখে সবসময় মোবাইল ফোন, তাই তারাও হয়তো ছোটবেলায় মোবাইল ব্যবহার শিখে নিয়েছে। একসময় হয়তো আরও আধুনিক কোনো প্রযুক্তি আসবে, কিন্তু এই প্রজন্ম আর কখনও জানবে না চিঠির অপেক্ষার অনুভূতি কী ছিল।
ডাক বিভাগের কর্মব্যবস্থা অনেকটাই কমে গেছে। আগের মতো ডাকপিয়ন আর বাড়ির দরজায় এসে দাঁড়িয়ে বলে না, “আপনার চিঠি এসেছে।” কারণ এখন আর কেউ চিঠি লেখে না, চিঠি আসে না। অথচ একটা চিঠির মাঝে লুকিয়ে থাকত অনেক অনুভব—হাসি, কান্না, ভালোবাসা, স্মৃতি, আশা-নিরাশা। সেই চিঠি হাতে পাওয়ার যে অনুভূতি, তা মোবাইল ফোনের মেসেজে পাওয়া যায় না।
রাস্তার পাশে যে ডাকবাক্সে চিঠি ফেলা হতো, সেটাও আজ মরিচা পড়ে গেছে। কেউ আর সেটি রং করে না, তালাও নেই। প্রয়োজন না থাকায় যত্নও নেই। সেই ডাকপিয়নও আর আসে না।
হয়তো আত্মীয়রা এখনো আছে, বন্ধুরাও আছে। কিন্তু কে লিখবে চিঠি? আমিও আর লিখি না।
সোহেল/টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/