বাংলাদেশে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করা শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় আট কোটি। বিশাল এই কর্মশক্তির জন্য কার্যকর কোনো নির্দেশনা ছাড়াই চূড়ান্ত হতে যাচ্ছে শ্রম আইন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উন্নয়ন কখনই টেকসই হবে না, যদি এই শ্রমশক্তিকে আইনের আওতার বাইরে রাখা হয়। এসব কারণেই বার বার সংশোধন করতে হচ্ছে শ্রম অধিকার আইন, আর পড়তে হচ্ছে বিদেশিদের চাপের মুখে।
প্রচন্ড খরতাপ। কিন্তু জীবন জীবিকা তো থামতে পারে না। তাই রোদ উপেক্ষা করেই এসব খেটে খাওয়া মানুষের ছুটে চলা।
প্রচণ্ড খরতাপেও মানুষের জীবন-জীবিকা থেমে থাকে না। তাই রোদ উপেক্ষা করেই ছুটে চলে খেটে খাওয়া মানুষ।
এদিকে হাইকোর্ট আইন করেছে- এই তাপে কোট পরতে হবে না আইনজীবীদের। কিন্তু সমাজের তলালিতে থাকা এই রিকশাচালকদের পলেস্টারের জ্যাকেট পরেই রিকশা চলাতে দেখা গেছে। সে কারণেই হয়তো সক্রেটিস বলেছিলেন, আইন হচ্ছে গরিবের জন্য মাকড়সার জাল, আর ধনীর জন্য বিশাল আকাশ।
আট কোটি অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের কর্মীদের জন্য নেই শ্রম আইন। নির্ধারিত নেই ন্যূনতম মজুরিও। ছুটির কোনো কাঠামোও নেই। রিকশার চাকার মতো ঘুরলেই তবে চলবে, জীবন জীবিকা।
অবশ্য এখন যে শ্রম আইন হয়েছে তাও পাঁচ বার সংস্কারের পথে। কারণ সংস্কার নিয়ে আগ্রহ আছে বিদেশের।
শ্রম এবং কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জয়েন্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ হোসেন সরকার বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে আমাদের ডেভেলপড কান্ট্রিতে পৌঁছাতে হবে। সাত কোটি ৪৩ লাখ শ্রমিককে বাদ দিয়ে সরকার এটা করতে পারবেনা। এ কারণে আমাদের যারা স্টেক হোল্ডার আছেন তাদের পক্ষ থেকে যতো রকমের পরামর্শ আসে ওই বিষয়গুলোকে আমার বাড়তি চাপ হিসেবে না দেখে সুযোগ হিসেবে দেখি।
তিনি বলেন, একটি ডেডেভলপড কান্ট্রির একজন লেবার যে ধরনের রাইটস অ্যাভেইল করে এবং সুযোগ পায় এটা আমাদের সোস্যাল ইকনোমিক কনটেক্সে অনেক সময় সম্ভব হয় না।
শ্রম আইন নিয়ে কাজ করেন এমন ব্যক্তিরা বলছেন, বাংলাদেশে শ্রমিকের সঙ্গা নিয়েই দ্বিমত আছে। যার সুযোগ নেয় মালিকরা।
শ্রমিকের নুন্যতম মজুরি প্রতি পাঁচ বছরে নয়, প্রতি বছর বৃদ্ধি করা উচিত বলেও মত দেন তারা
মঙ্গলবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে সংশোধিত শ্রম আইন পাশ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম।
তিনি বলেছেন, আইন পাশ হওয়ার আগ পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না, কলকারখানায় শ্রমিক সংগঠন করার ক্ষেত্রে মোট শ্রমিকের কতো শতাংশে সম্মতি থাকতে হবে। পুরো প্রক্রিয়াটা সংশ্লিষ্ট মহলের ওপর নির্ভর করছে।
গত বছরের দুই নভেম্বর ‘বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) বিল–২০২৩’ পাশ হয় একাদশ জাতীয় সংসদের শেষ অধিবেশনে। এরপর পাঠানো হয় রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য। কিন্তু ‘মুদ্রণ’ ভুল থাকায় পুনর্বিবেচনার জন্য সংসদে ফেরত পাঠান রাষ্ট্রপতি।
শ্রম আইনের পাশাপাশি সংশোধনী আনা হয়েছে অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ আইনেও। আর এসব পরিবর্তনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়াগুলো পূরণ করার কথা এর আগে জানিয়েছিলেন বাণিজ্য সচিব।
আরএম/ টাঙ্গন টাইমস
https://slotbet.online/